চোখের ডাক্তারের কাছে গেলেই চশমা ধরিয়ে দেবে, কিছুদিন পরপর পাওয়ার বাড়াতে হবে, আর চশমা হয়ে যাবে সারা জীবনের সঙ্গী—সমাজে এ রকম একটা ধারণা প্রচলিত আছে। শুধু প্রচলিত আছেই নয়, এ ধারণা থেকে অনেকেই নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করানো থেকে বিরত থাকেন। যদিও বছরে অন্তত একবার চোখ পরীক্ষা করানো উচিত, বিশেষ করে শিশু এবং ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের।
চশমা আসলে কেন প্রয়োজন, কাদের দরকার, কিছুদিন ব্যবহার করার পর কি চশমা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে, এ রকম নানান প্রশ্ন আমাদের মনে আসে। আসুন এ সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণাগুলো দূর করি।
যাদের দূরের বা কাছের দৃষ্টির ত্রুটি চশমা দিয়ে ভালো হয়, তাদের চশমা ব্যবহার করে যেতে হবে। সাধারণত জন্মগতভাবে কারও চোখের আকৃতি স্বাভাবিকের তুলনায় কম বা বেশি থাকলেই তাদের চশমা প্রয়োজন হয়।
এখন প্রশ্ন, কত দিন চশমা ব্যবহার করতে হবে, চশমা কি সারা জীবন থেকে যাবে নাকি একটা সময় বাদ দেওয়া যাবে?
সাধারণত ৪ থেকে ৬ মাস অন্তর চশমার পাওয়ার পরিবর্তন হতে পারে এবং সেটা ২০ কি ২১ বছর বয়স পর্যন্ত। এর মধ্যে নিয়মিত ফলোআপের মাধ্যমে শুধু আপনার চোখের চিকিৎসক জানাতে পারবেন চশমা থাকবে, পাওয়ার পরিবর্তন হবে, নাকি চশমা বাদ দেওয়া যাবে। অনেক ক্ষেত্রে সারা জীবন চশমা ব্যবহার করার প্রয়োজন হতে পারে।
আবার স্বাভাবিক স্বচ্ছ দৃষ্টি থাকার পরও চোখের বাঁকা বা ট্যারা রোগের চিকিৎসার অংশ হিসেবেও চশমা দেওয়া হয়।
চশমার বিকল্প কি কোনো ওষুধ আছে?
না, নেই। চশমার কোনো বিকল্প হয় না, তবে ‘ল্যাসিক’ এবং অন্যান্য রিফ্র্যাকটিভ সার্জারির মাধ্যমে চশমা থেকে মুক্তি মিলতে পারে। তবে এই অস্ত্রোপচারের আগে কিছু পরীক্ষা করে দেখতে হয়, যে রোগী ল্যাসিক বা এ–জাতীয় অস্ত্রোপচারের জন্য উপযোগী কি না। শুধু চক্ষুবিশেষজ্ঞের পরামর্শমতোই যেকোনো অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।
ডা. মামুনুর রশীদ চৌধুরী, চক্ষুবিশেষজ্ঞ ও সার্জন, ইস্পাহানী ইসলামিয়া চক্ষু ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ঢাকা