কোনো কাজের জন্য ভালোভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বোঝাতে ‘আদাজল খেয়ে’ লেগে পড়ার কথা বলা হয়। প্রতিটি দিনই শুরু হয় নতুন, অনন্য এক রূপ নিয়ে। কেমন হয় যদি প্রতিটি দিনই ‘আদাজল খেয়ে’ শুরু করা যায়? রোজ সকালে আদাজল খেলে কি সত্যিই কোনো উপকার পাওয়া যায়?
সকালে খালি পেটে পানি খাওয়া দারুণ অভ্যাস। আবহাওয়া যেমনই থাকুক না কেন, দেহের কোষগুলোর স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা বজায় রাখার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত পানি। সকাল সকাল পানি বা পানীয় খেলে দেহের পানির চাহিদা পূরণের পথে আপনি এগিয়ে গেলেন এক ধাপ। আর পানির সঙ্গে আদা যোগ করা হলে আদার উপকারিতাও পাওয়া যাবে। খালি পেটে আদাজল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানালেন রাজধানীর গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সায়েন্সের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শম্পা শারমিন খান।
খালি পেটে আদাজল খেলে খাবার হজম হবে ঠিকঠাক। বদহজমের কোনো উপসর্গ থাকলে তা উপশম হবে।
আদাজলে দিন শুরু করলে পানিশূন্যতার ঝুঁকি কমবে। কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলেও উপকার পাবেন।
ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে সকালের আদাজল। ত্বক থাকবে সতেজ।
রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতেও কাজে দেয় এটি।
শরীরের কোথাও প্রদাহ কিংবা ব্যথা থাকলে এই পানীয় পানে খানিকটা কষ্ট লাঘব হয়। এসব ক্ষেত্রে সকালে খালি পেটে আদাজল খাওয়ার পাশাপাশি রাতে কাঁচা হলুদ মেশানো দুধ খেলে বেশি উপকার পাবেন।
সঠিক নিয়ম মেনে রোজ সকালে আদাজল খেলে এর পরোক্ষ প্রভাবে ওজনও কমবে।
উপকার তো জানা হলো, এবার জেনে নেওয়া যাক, রোজ সকালে খালি পেটে আদাজল খেলে দেহের কোনো সমস্যা হতে পারে কি না। প্রশ্ন রেখেছিলাম রাজধানীর শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিপাকতন্ত্র বিশেষজ্ঞ ডা. মো. মুসআব খলিলের কাছে। তিনি জানালেন, খালি পেটে আদাজল খেলে দেহের কোনো ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই।
শম্পা শারমিন খান জানালেন, কীভাবে আদাজল তৈরি করা ভালো, আর কীভাবেই–বা তা খাওয়া উচিত।
সকালে উঠে প্রথমে এক গ্লাস পানি খাওয়া ভালো, কোনো কিছু না মিশিয়ে এক গ্লাস বিশুদ্ধ, নিরাপদ পানি। এরপর আপনি আদাজল খেতে পারেন।
আদাজল তৈরির জন্য একটি পাত্রে এক গ্লাস পানি নিয়ে চুলায় দিন। এক ইঞ্চি আদার খোসা ছাড়িয়ে, থেঁতলে বা কুচি করে রাখুন। পানি ফুটতে থাকলে তাতে কুচি বা থেঁতলানো আদা দিন। চুলা নিভিয়ে পাত্রটি নামিয়ে ফেলুন। অন্তত ৫-৭ মিনিট ঢেকে রাখুন। একটু গরম থাকতে থাকতেই খেয়ে নিন।
আদাজল খাওয়ার আধঘণ্টা পর সকালের নাশতা খেয়ে নিন।
শরীরের কোথাও ব্যথা বা প্রদাহ থাকলে রাতে এক গ্লাস (২০০ মিলিলিটার) গরম দুধে আধা চা–চামচ কাঁচা হলুদ বাটা মিশিয়ে খেয়ে নিন। দুধের তাপমাত্রা সহনীয় অবস্থায় থাকতে থাকতেই হলুদ বাটা মিশিয়ে নেবেন, অর্থাৎ আরেকটু ঠান্ডা হয়ে কুসুম গরম হয়ে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন না।