আচমকা প্রসববেদনা, নাগালের মধ্যে চিকিৎসক বা আয়া নেই, কী করবেন

স্কাউট দলের সদস্য সোনিয়ার কোলে মেট্রোরেল স্টেশনে জন্ম নেওয়া রাজত্ব
ছবি: সংগৃহীত

পরিকল্পনা মেনে তো আর জীবন চলে না। অনেক সময় প্রত্যন্ত এলাকায়, যেখানে নাগালের মধ্যে কোনো চিকিৎসক বা অভিজ্ঞ আয়া নেই, আচমকা উঠতে পারে প্রসববেদনা। এমন জরুরি পরিস্থিতি যদি হয়েই যায়, কী করবেন? ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগের কনসালট্যান্ট ডা. লুবনা জাহান বললেন, প্রসবের সময়ে কোনোভাবেই সেটিকে আর থামিয়ে রাখা যায় না। প্রসব যাতে নিরাপদ হয়, স্বজনদের তখন সেই চেষ্টাই করতে হবে। যা করতে পারেন—

অনেক সময় আচমকা উঠতে পারে প্রসববেদনা
  • প্রসূতিকে সাহস জোগাতে হবে।

  • চারদিক কাপড় দিয়ে ঢেকে যতটা সম্ভব আড়ালের ব্যবস্থা করতে হবে।

  • সমতল জায়গায় প্রসূতিকে শুইয়ে দিয়ে দুই হাঁটু ভাঁজ করে রাখতে বলুন। জরায়ুতে চাপ বোধ করলে সেই চাপের সঙ্গে সঙ্গে পায়খানার রাস্তার দিকে চাপ দিতে বলতে হবে। পায়খানা করার ভঙ্গিতেও বসতে পারেন প্রসূতি। তবে মাথা নেমে এলে শুয়ে পড়াই ভালো, নইলে মাথায় আঘাত পেতে পারে নবজাতক।

  • মাথার বেশির ভাগ অংশ বেরিয়ে এলে সাহায্যকারী পরিষ্কার হাতে তা সামান্য টেনে আনতে পারেন।

  • নবজাতক বেরিয়ে এলে সুতা বা রশি দিয়ে নাড়ি বেঁধে দিন। দুই আঙুল ব্যবধানে তিনটি বাঁধন দিন।

  • অব্যবহৃত ব্লেড দিয়ে নাড়ি কেটে দিন। এমনভাবে কাটতে হবে যেন নবজাতকের দিকে দুটি বাঁধন থাকে, আর মায়ের দিকে একটা। ব্লেডটি নতুন না হলে ফুটন্ত পানিতে ২০ মিনিট ফুটিয়ে ব্যবহার করুন। তবে ব্লেডটিকে অবশ্যই ধারালো হতে হবে। নাড়ি কাটার নিরাপদ সরঞ্জাম না পেলে অক্ষত নাড়ি, ফুলসহই শিশুকে নিকটস্থ চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যান।

  • নাড়ির অন্য প্রান্ত, যেদিকে একটি বাঁধন আছে, টান করে রাখতে হবে। পরবর্তী ব্যথা উঠলে ফুল বেরিয়ে আসবে।

  • নবজাতক জন্মের পরপরই না কাঁদলে উদ্দীপনা দিন। হাতের তালুর সাহায্যে পিঠে হালকা চাপড়, পায়ে হালকা টোকা, মুখে পানি থাকলে মুছে দেওয়াই উদ্দীপনা।

  • উষ্ণ রাখতে নবজাতককে মুছিয়ে পরিষ্কার, শুকনা কাপড়ে শরীর ও মাথা মুড়িয়ে মায়ের সংস্পর্শে রাখতে হবে। শালদুধ খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

  • মায়ের রক্তক্ষরণ বেশি হলে অনেকটা সময় ধরে তলপেটের মাঝবরাবর মালিশ করতে থাকুন।