৮ সেপ্টেম্বর পালিত হলো বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল, ‘কোমরব্যথা’ বা ‘লো ব্যাক পেইন’। কোমরব্যথায় ফিজিওথেরাপির ভূমিকা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে পালিত হয় এবারের দিবস।
কোমরব্যথা খুবই পরিচিত একটি সমস্যা, যা বৈশ্বিক জনসংখ্যার ৮০ শতাংশকে কোনো না কোনো সময়ে প্রভাবিত করে। এটি কর্মক্ষমতা হ্রাস ও দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় বাধা সৃষ্টি করার অন্যতম কারণ।
কারণ
কোমরব্যথা নানা কারণে হতে পারে, যেমন ভুল ভঙ্গি বা অবস্থান, পেশিতে টান লাগা, মেরুদণ্ডের ডিস্কের সমস্যা, ডিজেনারেটিভ বা বয়সজনিত ক্ষয়, পেশাগত কারণ। এটি স্বল্পমেয়াদি বা দীর্ঘস্থায়ী (তিন মাসের বেশি) হতে পারে।
প্রভাব
কোমরব্যথার প্রভাব অনেক। এটি স্বাস্থ্যসেবা ব্যয় বৃদ্ধি করে ও ব্যক্তির কর্মক্ষমতার ক্ষতি করে। ব্যক্তির মানসিক চাপ ও সামাজিক কার্যকলাপে অংশগ্রহণেও প্রভাব ফেলতে পারে।
ফিজিওথেরাপির ভূমিকা
ফিজিওথেরাপিস্টরা কোমরব্যথার মৌলিক কারণ নির্ণয় করতে সহায়তা করতে পারেন। শারীরিক পরীক্ষার পাশাপাশি রোগীর ইতিহাস ও প্রয়োজনে ইমেজিং স্টাডি ব্যবহার করে রোগের অবস্থার গভীরতা বুঝতে সহায়তা করেন ফিজিওথেরাপিস্টরা। কোমরব্যথার কারণের চিকিৎসার পর নানা ধরনের ফিজিও চিকিৎসার পদ্ধতি রয়েছে।
ব্যায়াম: কোমরের মাংসপেশি শক্তিশালী করা ও নমনীয়তা বৃদ্ধির জন্য কাস্টমাইজড ব্যায়াম বা প্রোগ্রাম দেওয়া হয়।
ম্যানুয়াল থেরাপি: কোমরের গতিশীলতা উন্নত করতে স্পাইনাল ম্যানিপুলেশন, মোবিলাইজেশনসহ বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।
শিক্ষা: রোগীদের সঠিক শারীরিক অবস্থান বা ভঙ্গি এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তন সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া হয়, যাতে ভবিষ্যতে কোমরব্যথার পুনরাবৃত্তি কমে।
ব্যথা ব্যবস্থাপনা: ব্যথা কমাতে গরম বা ঠান্ডা থেরাপি, ইলেকট্রোথেরাপিসহ বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
প্রতিরোধ
কোমরব্যথা প্রতিরোধে ফিজিওথেরাপিস্টরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন, যেমন রোগীর কাজে ও বাড়ির পরিবেশে সঠিক আর্গনমিক পদ্ধতি ও নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপের প্রস্তাবনা তৈরি করতে পারেন। এ ছাড়া রোগী ও পেশাজীবীদের কোমরব্যথার সঠিক চিকিৎসা ও প্রতিরোধ সম্পর্কে শিক্ষিত করতে পারেন।
এম ইয়াছিন আলী, চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ধানমন্ডি, ঢাকা