যেকোনো পূর্ণবয়স্ক, শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ-সবল ব্যক্তি রক্ত দান করতে পারবেন। রক্তদানের সময় সাধারণত ৪৫০ মিলিলিটার রক্ত নেওয়া হয়। তিন মাসের মধ্যে এই পরিমাণ রক্তের উপাদান আবার পূরণ হয়ে যায়। তাই একজন সুস্থ-সবল ব্যক্তি জীবনে অনেকবারই রক্ত দিতে পারেন। বাংলাদেশ সরকারের গেজেট অনুয়ায়ী রক্তদানের সক্ষমতা নির্ণয় করা হয়ে থাকে। প্রতিটি রক্তদান কেন্দ্রে রক্তদানের সক্ষমতা যাচাই করার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট ফরম থাকে, যা রক্তদাতা নিজে পূরণ করবেন। এরপর কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রক্তদানের উপযুক্ততা নির্ধারণ করা হয়।
যাঁরা রক্ত দান করতে পারবেন না
বয়স ১৮ বছরের নিচে বা ৬০ বছরের বেশি
ওজন ৫০ কেজির কম হলে
শারীরিকভাবে সুস্থ না হলে রক্ত দিতে পারবেন না। যেমন রক্ত দেওয়ার সময় সর্দি, কাশি, গলাব্যথা, ফ্লু বা অন্য কোনো রোগের সংক্রমণ হয়ে থাকলে রক্ত দেওয়া যাবে না।
দাঁতের কোনো চিকিৎসা চললে তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রক্ত দেওয়া যাবে না
হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ১২ গ্রাম/ডিএলের নিচে হলে
নাড়ির গতি মিনিটে ৬০ থেকে ১০০-এর বাইরে হলে বা হৃৎস্পন্দন অনিয়মিত হলে
রক্তচাপ ডায়াস্টোলিক ৫০ থেকে ১০০ এবং সিস্টোলিক ১০০ থেকে ১৮০ মিমি মার্কারি—এই সীমার বাইরে থাকলে
শরীরের তাপমাত্রা ৩৭.৫ ডিগ্রির ওপরে গেলে
হৃদ্রোগ, ক্যানসার, কিডনির অসুস্থতা, অ্যাজমা বা শ্বাসযন্ত্রের অসুবিধা, টিবি, অ্যালার্জি থাকলে
ইপিলেপ্সি, ফিট বা কোনো মানসিক ব্যাধি থাকলে
ডায়াবেটিস বা থাইরয়েডের সমস্যা আছে—এমন ব্যক্তি রক্ত দিতে পারবেন না
ম্যালেরিয়া এনডেমিক জোনে (পার্বত্য চট্টগ্রাম) ভ্রমণ করলে তিন মাসের মধ্যে রক্তদান থেকে বিরত থাকবেন
কোনো টিকা গ্রহণের এক মাসের মধ্যে রক্ত দেওয়া যাবে না
রেবিস বা হেপাটাইটিস বি-এর টিকা গ্রহণের ছয় মাসের মধ্যে
গর্ভাবস্থায় ও ব্রেস্ট ফিডিং করানোর সময় রক্ত দেওয়া যাবে না। এ ছাড়া গর্ভপাতের ছয় মাসের মধ্যেও রক্ত না দেওয়াই ভালো।
অধ্যাপক সৈয়দা মাসুমা রহমান, রক্ত পরিসঞ্চালন বিশেষজ্ঞ