দুধে স্নেহপদার্থ, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি থাকে। দুধকে একটি প্রায় সম্পূর্ণ খাবার বলা যায়। দুধ খাওয়ার তিনটি উপযুক্ত সময়—সকালে নাশতার সময়, বিকেল চারটার দিকে ও রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আধা ঘণ্টা আগে। এর মধ্যে সবচেয়ে ভালো সময় হচ্ছে রাত। কারণ, দুধ ঘুমের গুণগত মানও উন্নত করে।
শরীরে ‘ল্যাকটোজ’ এনজাইমের অভাব থাকলে দুধ হজম হয় না। এ ছাড়া কিডনিতে পাথর, পিত্তথলিতে প্রদাহ বা অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহ আছে, এমন ব্যক্তি দুধ খেতে পারেন না। দুধে হজমের সমস্যা, পেটব্যথা বা অ্যালার্জি হলে কয়েকটি স্বাস্থ্যকর বিকল্প রয়েছে।
সয়া মিল্ক স্বল্প ফ্যাটযুক্ত উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের ভালো উৎস।
সয়া মিল্ক স্বল্প ফ্যাটযুক্ত উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের ভালো উৎস। এ দুধে গরুর দুধের চেয়ে কম স্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে। এতে আইসোফ্লেভন নামের প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে, যা ক্ষতিকর এলডিএল চর্বি কমায়। লেসিথিন আছে, যা স্মরণশক্তি বাড়ায়। এ ছাড়া আছে শরীরে শক্তি উৎপাদনকারী চর্বি, দাঁত ও হাড় গঠন এবং হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধকারী ক্যালসিয়াম, রক্তশূন্যতা ও শরীরের দুর্বলতা প্রতিরোধকারী লৌহ, রাতকানা ও চক্ষুরোগ প্রতিরোধক ভিটামিন এ। মেনোপজের পর নারীদের জন্য সয়া দুধ উপকারী।
যাঁরা ল্যাকটোজ সহ্য করতে পারেন না, ভেগান বা শুধুই ওজন কমাতে চান, তাঁদের জন্য ওট মিল্ক বেশ উপকারী। ওট মিল্ক সাধারণত হোল গ্রেইন ওটস বা স্টিল কাট ওটস দিয়ে বানানো হয়। ওটস প্রোটিন ও ফাইবারযুক্ত খাবার। সাধারণ গরুর দুধ, সয়া মিল্ক—এমনকি কাঠবাদামের দুধের তুলনায় বেশি ফাইবার থাকে ওট মিল্কে। গরুর দুধের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ ভিটামিন এ এবং বেশি ক্যালসিয়াম আছে।
চালে খুব কম মানুষেরই অ্যালার্জি হয়। এ কারণে সেদ্ধ চালের গুঁড়া থেকে তৈরি এই দুধ অনেকেই পছন্দ করেন। সেদ্ধ চাল, বাদামি চালের রস ও মাড় থেকে তৈরি হয় রাইস মিল্ক। তবে দুধের তুলনায় এতে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেশি ও প্রোটিনের পরিমাণ কম। ৮ আউন্স পরিমাণ চিনিমুক্ত রাইস মিল্কে রয়েছে পর্যাপ্ত ক্যালরি, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়ামসহ ভিটামিন এ, ডি।
গরুর দুধের সঙ্গে নারকেলের দুধের ঘনত্ব ও রঙের মিল রয়েছে। যাঁদের ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স রয়েছে, তাঁরা অনায়াসে নারকেলের দুধ খেতে পারেন। কারণ, এটি ল্যাকটোজমুক্ত। তবে নারকেলের দুধে রয়েছে উচ্চ মানের ফ্যাট। প্রোটিন দুধের চেয়ে কম।
আমন্ড বা কাঠবাদামের নির্যাস থেকে তৈরি দুধে গরুর দুধের তুলনায় কম প্রোটিন থাকে। তবে স্বাদ ও গন্ধ আকর্ষণীয়। যথেষ্ট মজাদারও বটে। এতে অ্যালকালাইন রয়েছে। সহজেই হজম হয়। এতে দুধের মতো প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম নেই। সেটা পূরণ করতে কলা, খেজুর ইত্যাদি প্রয়োগ করা যেতে পারে। এতে বেশি ক্যালরি ও কোলেস্টেরল নেই।
আগামীকাল পড়ুন: স্ট্রোকের ঝুঁকি কীভাবে কমাবেন