নতুন একটা দিনের নতুন একটা সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরপরই মুঠোফোনের পর্দায় চোখ রাখেন কেউ কেউ। কোনো বার্তা এসেছে কি না ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেউ নতুন কিছু পোস্ট করল কি না, এসব দেখেই দিন শুরু করেন তাঁরা। এমন অভ্যাস যদি থেকে থাকে আপনারও, তাহলে জেনে রাখুন এর ভিত্তিতে আপনার ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে।
কেবল নতুন কিছু একটা দেখতে পাওয়ার আকর্ষণে সকালে ঘুম ভাঙার পরপরই মুঠোফোন স্ক্রল করার যে ছোট্ট সিদ্ধান্তটি আপনি নিয়ে ফেলেন, তা থেকে বোঝা যায় আপনি আবেগের বশে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। আপনি জীবনযাপনের সব ক্ষেত্রে শরীর ও মনের জন্য স্বাস্থ্যকর অভ্যাসের চর্চা করেন না। যে জিনিসটির প্রতি আপনি দুর্দমনীয় আকর্ষণ অনুভব করেন, তার ভালো–মন্দ বিচার করেন না। যদিও আপনি জানেন, কোনটা করা উচিত আর কোনটা করা অনুচিত। তবু আপনি এই জানাবোঝার চেয়ে আবেগকে বেশি গুরুত্ব দেন। আবেগের বশে চট করে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন।
আপনি যতক্ষণ ভার্চ্যুয়াল দুনিয়ায় ছিলেন না, তখন কোথায় কী ঘটে গেল, তার খবর রাখা চাই-ই চাই আপনার। ভাবনার এই ধারাটিকে বলে ‘ফিয়ার অব মিসিং আউট’। অর্থাৎ ‘গুরুত্বপূর্ণ’ কিছু ‘মিস’ করার ভয়। এর তাড়নায় ঘুম ভাঙামাত্রই মুঠোফোন দেখা চাই আপনার।
এই জীবনধারায় আপনি বেশ মানসিক চাপেও থাকেন। একধরনের উদ্বেগ কাজ করে আপনার মনের গহিনে। ভার্চ্যুয়াল দুনিয়ার ব্যাপারে প্রায় সব সময়ই বেশ ‘অ্যালার্ট’ বা অতন্দ্র থাকেন আপনি। ব্যাপারটা কিন্তু সত্যিই বেশ চাপের।
এমনটা হতেই পারে যে আপনি অন্যের প্রশংসার প্রতি নির্ভরশীল। নিজের সত্তা ও কর্মপরিসর নিয়ে আত্মতৃপ্তির অভাব থাকতে পারে আপনার। যা কিছু ভালো, তাকে ভালো হিসেবে মেনে নিতেও অন্যের সমর্থন প্রয়োজন হয় আপনার। আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অন্যের সঙ্গে সময় কাটানোকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেন আপনি।
সকালে ঘুম ভাঙার পর আপনি নতুন উদ্যম নিয়ে নতুন দিনের কাজ শুরু করবেন, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তা না করে আপনি সেই সতেজ সময় ও আপনার মনোযোগ ব্যয় করছেন মুঠোফোনের পর্দায়। এই প্রবণতা থাকার অর্থ হলো, আপনি সকাল সকালই আপনার জীবনের সত্যিকার কাজগুলোকে কম গুরুত্বের তালিকায় ঠেলে দিচ্ছেন এবং সেসব কাজে অকারণে দেরি করছেন।
সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট