পারকিনসন্স হলো একধরনের নিউরো-ডিজেনারেটিভ বা স্নায়বিক রোগ। মস্তিষ্কের ডোপামিন তৈরির কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হলে এ রোগ হয়। এর প্রাথমিক বৈশিষ্ট্য হলো স্নায়ুতে প্রিসাইনাপ্টিক প্রোটিন জমা হওয়া।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এ রোগের কারণ নির্ণয় করা যায় না। প্রাইমারি পারকিনসোনিজমের তেমন কোনো অন্তর্নিহিত কারণ পাওয়া যায় না। সেকেন্ডারি পারকিনসোনিজমের পেছনে কিছু কারণ আছে। যেমন পোস্ট-এনকেফালাইটিক বা প্রদাহ, টক্সিন যেমন এমপিটিপি, ম্যাঙ্গানিজ, কার্বন মনোক্সাইড দূষণে এটি হতে পারে। রেসারপিন, আলফা মিথাইলডোপা ওষুধ কিংবা মস্তিষ্কের টিউমার বা আঘাতের কারণেও হতে পারে।
প্রথমত, হাত ও পায়ে কাঁপুনি হয়। দ্বিতীয়ত, হাত ও পা স্বাভাবিকের তুলনায় শক্ত হয়ে যায়। তৃতীয়ত, চলাফেরার গতি ধীর হয়ে যায়।
আরও কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যেমন শরীরের ভারসাম্য ধরে রাখতে না পারায় সামনের দিকে ঝুঁকে হাঁটতে দেখা যায়।
কণ্ঠস্বর নিচু হতে পারে বা কমে যেতে পারে। এমনকি চোখের পাতার নড়াচড়াও কমতে পারে।
শরীরের ভারসাম্য ধরে রাখতে সমস্যা হওয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি বারবার পড়ে যেতে পারেন। বিশেষ করে হঠাৎ পেছনে ফিরতে সমস্যা হয়। ছোট ছোট পদক্ষেপে সামনে একটু ঝুঁকে হাঁটেন।
হতাশা, উদ্বেগ, উদাসীনতা, মনোযোগহীনতা, ঘুম কমে যাওয়া—এ ধরনের লক্ষণ দেখা দেয়।
কোষ্ঠকাঠিন্য ও প্রস্রাব আটকে যাওয়ার মতো সমস্যাও হয়ে থাকে।
রোগটি পুরুষদের বেশি হয়। ৫০–এর বেশি বয়সীদের এই রোগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি। তবে জেনেটিক কারণে হলে অনেক কম বয়সে রোগটি হতে পারে।
ওষুধের মাধ্যমে রোগটিকে একটি পর্যায়ে স্থির রাখার চেষ্টা করা হয়; যাতে আর না বাড়ে। তবে আক্রান্ত ব্যক্তির কর্মক্ষমতা ও ভারসাম্য বাড়ানোর জন্য ফিজিওথেরাপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
পারকিনসন্স রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে রোগের অবস্থার ওপর ভিত্তি করে আইআরআর, ওয়াক্স প্যাক, লো লেভেল স্টিমুলেশন, মাসেল ভাইব্রেটর দেওয়া যেতে পারে।
আক্রান্ত ব্যক্তিকে প্যাসিভ মুভমেন্ট অব দ্য জয়েন্ট, স্লো প্যাসিভ স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ, প্রোগ্রেসিভ স্ট্রেন্থদেনিং এক্সারসাইজ, প্যাসিভ জয়েন্ট মোবিলাইজেশন এক্সারসাইজ, ব্যালেন্স এক্সারসাইজ ইন সিটিং ইত্যাদি থেরাপি দেওয়া যায়।
■ রোগটি প্রতিরোধের কোনো ব্যবস্থা এখনো জানা নেই। তবে দুশ্চিন্তা কমানো, আত্মবিশ্বাস ও সাহস বাড়ানো, সুস্থ হওয়ার আগ্রহ তৈরি করতে হবে।
■ স্বাভাবিক দৈনন্দিন কাজ করার চেষ্টা জরুরি।
আগামীকাল পড়ুন: লিভার সিরোসিস প্রতিরোধ সম্ভব