কিছু শিশু জন্মগত বা বংশগত ত্রুটি নিয়ে জন্মায়। কিছু কিছু রোগের জন্য জন্মের পরপর জরুরি চিকিৎসাসেবা এমনকি অস্ত্রোপচারেরও প্রয়োজন হয়। আর যখনই আমরা সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুর অস্ত্রোপচারের কথা শুনি, তখন স্বভাবতই ভয় পেয়ে যাই। এতটুকু শরীর, অস্ত্রোপচারের ধকল কীভাবে সইবে?
দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে এখন পর্যন্ত শিশুর অস্ত্রোপচার সেবা, বিশেষ করে নবজাতকের অস্ত্রোপচার সেবা পাওয়া দুষ্কর। আবার অনেকেই জন্মগত ত্রুটিগুলোকে সৃষ্টিকর্তার অভিশাপ কিংবা জিন-ভূতের আসর—এমন নানা কুসংস্কার ভেবে সঠিক চিকিৎসা থেকে দূরে থাকেন, অযথা বিলম্ব করেন। এতে বিপদ হতে পারে।
প্রতিবার খাবারের পর বমি করা।
সবুজ বা লাল রঙের বমি করা।
পায়ুপথ তৈরি না হওয়া বা স্বাভাবিক স্থানে না থাকা।
জন্মের দুই দিনের মধ্যে সবুজ পায়খানা না হওয়া।
জন্ম থেকেই জন্ডিস দেখা দেওয়া ও কাঁদামাটির মতো পায়খানা হওয়া।
ফোঁটায় ফোঁটায় প্রস্রাব করা ও কোঁৎ দিয়ে প্রস্রাব করা।
নাড়িভুঁড়ি পেটের বাইরে থাকা।
মেরুদণ্ডের টিউমার ফেটে পানি বের হওয়া ইত্যাদি।
এসব সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই শিশু সার্জারি–বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
নবজাতকের অস্ত্রোপচারে ঝুঁকি বেশি। জন্মের প্রথম দুই-তিন মাস পর্যন্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অপরিপক্ব থাকায় তারা সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। এ ছাড়া বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম থাকে, জীবাণুর সংক্রমণ বেশি হয়, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এসব কারণে বাচ্চার অজ্ঞানজনিত ও অস্ত্রোপচার পরবর্তী জটিলতার আশঙ্কা বেশি।
যেসব শিশুর সময়ের আগেই জন্ম হয় এবং যাদের ওজন আড়াই কেজির কম হয়, তাদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকিটা আরও অনেক বেড়ে যায়। চিকিৎসাবিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতিতে এসব জটিলতা এখন অনেকাংশে কমে গেছে। যদি সঠিক সময়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া যায়, তাহলে নবজাতকের মৃত্যুর হার অনেকটাই কমিয়ে আনা যায়। তবে নবজাতকের অস্ত্রোপচারের জন্য অবশ্যই বিশেষায়িত হাসপাতালের সেবা ও বিশেষজ্ঞ শিশু সার্জনের দরকার হবে।