কারও জ্বর আসার পর যদি খিঁচুনি হয় এবং রোগী অচেতন হয়ে যায়, তাহলে ধারণা করতে হবে, এটি এনসেফালাইটিস বা মস্তিষ্কের প্রদাহের কারণে হতে পারে। মস্তিষ্কে ভাইরাসের সংক্রমণ হলে এটি হয়।
হারপিস ভাইরাস সারা পৃথিবীতে এনসেফালাইটিসের অন্যতম কারণ। চিকেন পক্সে (জলবসন্ত) আক্রান্ত হওয়ার পরেও এটি হতে পারে। আমাদের দেশে শীতকালে কাঁচা খেজুরের রস খাওয়ার কারণে ‘নিপাহ ভাইরাস এনসেফালাইটিস’ হয়, যাতে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
অনেক সময় এনসেফালাইটিসের সঙ্গে মেনিনজেস বা মস্তিষ্কের আবরণীতে প্রদাহ হতে পারে, যাকে ‘মেনিনগোএনসেফালাইটিস’ বলে। এ ক্ষেত্রে ঘাড়ে ব্যথা থাকে এবং রোগী আরও অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন।
লক্ষণ
তীব্র জ্বর।
মাথাব্যথা।
খিঁচুনি।
এলোমেলো কথা বলা।
অচেতন হয়ে যাওয়া।
পরীক্ষা
মস্তিষ্কের এমআরআই পরীক্ষা করে এনসেফালাইটিস ধারণা করা যেতে পারে।
মেরুদণ্ডের ভেতর থেকে রস (সিএসএফ) বের করে পরীক্ষা করলেও এ রোগ নিখুঁতভাবে নির্ণয় করা যায়।
চিকিৎসা
রোগীকে বাসায় না রেখে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। অ্যান্টিভাইরাল ও স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ দীর্ঘ সময় শিরায় দিলে এবং সেই সঙ্গে ভালো নার্সিং দেওয়া গেলে এ ধরনের রোগী সুস্থ হয়ে যান।
নিপাহ ভাইরাস এনসেফালাইটিসের রোগীরা অনেক সময় গুরুতর অসুস্থ হয়ে যান, এমনকি মারাও যেতে পারেন। তাই এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার চেয়ে প্রতিরোধ করা উত্তম।
খেজুরের রস সংগ্রহ করার সময় পাত্রের চারপাশে স্যাপ স্কার্ট বা প্রতিরক্ষামূলক আবরণ ব্যবহার করতে হবে। খেজুরের রস কাঁচা খাওয়া যাবে না, ভালো করে ফুটিয়ে খেতে হবে। আক্রান্ত হলে অপেক্ষা না করে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে।
ডা. নাজমুল হক, সহকারী অধ্যাপক (নিউরোলজি), ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল, ঢাকা