অনেকে দীর্ঘদিন ধরে স্টেরয়েড ব্যবহার করছেন। স্টেরয়েড চোখের ড্রপ, নাকের স্প্রে, মুখে খাওয়ার ওষুধ বা ইনজেকশনের মাধ্যমে ব্যবহৃত হয়। এ ওষুধ দীর্ঘ মেয়াদে ব্যবহারে চোখের চাপ বা ইন্ট্রা–অকুলার প্রেশার সংক্ষেপে আইওপি স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে বাড়তে পারে। এ সমস্যাকে বলা হয় স্টেরয়েড ইনডিউসড গ্লুকোমা।
স্টেরয়েড ব্যবহারে ‘ট্রেবিকুলার মেশওয়ার্ক’–এ একধরনের পরিবর্তন হয়। ফলে ‘একুয়াস’ নির্গমন বাধাগ্রস্ত হয়। একে বলা যায় ওপেন অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমা। সবার ক্ষেত্রে এ রকম না–ও হতে পারে। কারও কারও বেলায় স্টেরয়েডে একধরনের সংবেদনশীলতা থাকে, যাঁদের বলা হয় স্টেরয়েড রেসপন্ডার। তাঁদের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে বেশি মাত্রায় স্টেরয়েড ব্যবহারের কারণে এমনটা হয়। প্রাথমিক অবস্থায় চোখের প্রেশার বেড়ে যাওয়া সাময়িক হতে পারে। স্টেরয়েড বন্ধ করে দিলে চোখের প্রেশার এমনিতেই স্বাভাবিক হয়ে আসে।
কারা ঝুঁকিতে
পারিবারিকভাবে যাঁদের গ্লুকোমার প্রবণতা আছে।
টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তি।
মায়োপিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি।
ছয় বছরের নিচের শিশু।
যাঁদের কোলাজেন ডিজিজ, যেমন এএসএলই, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস ও স্পন্ডিলাইটিস আছে।
যাঁরা চোখে সরাসরি স্টেরয়েড ব্যবহার করেন।
ইনহেলার বা ত্বকে দীর্ঘদিন ধরে স্টেরয়েডের ব্যবহার।
জন্মনিরোধক ডিপোট স্টেরয়েডের ব্যবহার। এ ছাড়া চোখের ভেতর ইনজেকশন ট্রায়ামসিলনেও এমন সমস্যা হতে পারে।
সতর্কতা
বিকল্প থাকলে স্টেরয়েড ওষুধ না নেওয়াই ভালো।
চিকিৎসকের অনুমতি ছাড়া স্টেরয়েড ব্যবহার করা যাবে না।
যাঁরা দীর্ঘমেয়াদি স্টেরয়েড ইনহেলার, জন্মনিরোধক ডিপোট স্টেরয়েড ব্যবহার করেন; কোলাজেন ডিজিজ বা ত্বকের সমস্যায় আক্রান্ত; যাঁরা চোখের সমস্যা বা অন্য কোনো কারণে স্টেরয়েড–জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করেন; তাঁদের নিয়মিত চোখের প্রেশার বা আইওপি পরিমাপ করতে হবে।
চোখের প্রেশার বেশি পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে স্টেরয়েড ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।
চিকিৎসা
চোখে এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে স্টেরয়েড বন্ধ করে দিতে হবে। এতে নিজ থেকে চোখের প্রেশার নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। নিজ থেকে চোখের প্রেশার নিয়ন্ত্রণে না এলে ওপেন এঙ্গেল গ্লুকোমার মতো অ্যান্টি গ্লুকোমা চিকিৎসার দরকার হবে। এ জন্য অতি দ্রুত চক্ষুবিশেষজ্ঞের কাছে যেতে হবে।
অধ্যাপক ডা. ইফতেখার মো. মুনির, গ্লুকোমা বিশেষজ্ঞ, বাংলাদেশ আই হসপিটাল, মালিবাগ শাখা, ঢাকা