ভালো থাকুন

শ্বাসকষ্ট বা বুকে ব্যথা কোন রোগের লক্ষণ

বর্তমান বিশ্বে হৃদ্‌রোগ এক নম্বর মরণব্যাধি হিসেবে চিহ্নিত। নানা ধরনের হৃদ্‌রোগ রয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ইস্কেমিক কার্ডিওমায়োপ্যাথি। এর ফলে হৃদ্‌যন্ত্র রক্ত ভালোভাবে পাম্প করতে পারে না। 

বেশির ভাগ সময় করোনারি ধমনি রোগে হৃৎপিণ্ডের পেশিতে পর্যাপ্ত অক্সিজেনসমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছাতে পারে না। ফলে হৃৎপিণ্ডের মারাত্মক ক্ষতি হয়। এই রোগে ওষুধে কাজ না হলে অস্ত্রোপচার দরকার হতে পারে। 

ইস্কেমিক কার্ডিওমায়োপ্যাথিতে আক্রান্ত রোগীর হৃৎপিণ্ডের বাঁ ভেন্ট্রিকল দুর্বল এবং আকারে বড় হয়ে যায়। বাঁ ভেন্ট্রিকল হলো হার্টের প্রধান পাম্পিং চেম্বার। তাই দুর্বল বাঁ ভেন্ট্রিকল হার্টের রক্ত পাম্প করার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। 

কীভাবে বুঝবেন

ইস্কেমিক কার্ডিওমায়োপ্যাথিতে আক্রান্ত হলে শ্বাসপ্রশ্বাসে দুর্বলতা অনুভব, পা ফুলে যাওয়া, খুব ক্লান্তি লাগা, প্রাত্যহিক কাজকর্ম ও ব্যায়াম করার শক্তি না পাওয়া, প্রায়ই বুকে ব্যথা হওয়া ও কাশি, হঠাৎ হঠাৎ বুক ধড়ফড় করা, মাথা ঘোরা বা মাঝে মাঝে হালকা মাথাব্যথা হওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যেতে পারে। 

আক্রান্ত কারও কারও ইস্কেমিক কার্ডিওমায়োপ্যাথির কোনো লক্ষণ না-ও থাকতে পারে। কারণ, করোনারি আর্টারি রোগ, হার্ট অ্যাটাক, করোনারি ভাস্কুলাইটিস, করোনারি আর্টারি ডিসেকশন, মাইক্রোভাস্কুলার রোগ, ফাইব্রোমাসকুলার ডিসপ্লাসিয়া, প্রিঞ্জমেটাল অ্যানজাইনা—ইত্যাদি কারণে ইস্কেমিক কার্ডিওমায়োপ্যাথি হতে পারে। 

কাদের ঝুঁকি বেশি

হৃদ্‌রোগ আর হার্ট অ্যাটাকের পারিবারিক ইতিহাস, উচ্চ রক্তচাপ, ধূমপান, ডায়াবেটিস ও উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল, বিএমআই ৩০-এর বেশি, শারীরিকভাবে সক্রিয় না থাকা ইত্যাদি এই রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। 

রোগনির্ণয়

একজন কার্ডিওলজিস্ট অবস্থা বুঝে রোগীকে কিছু পরীক্ষা করাতে পারেন। যেমন রক্ত পরীক্ষা, ইলেকট্রোকার্ডিওগ্রাম, বুকের এক্স-রে, থোরাসিক ইকোকার্ডিওগ্রাম, ট্রেডমিল টেস্ট, কার্ডিয়াক ক্যাথেটারাইজেশন। এ ছাড়া এমআরআই স্ক্যান, নিউক্লিয়ার মেডিসিন ইমেজিং, মায়োকার্ডিয়াল বায়োপসিও করতে দিতে পারেন। 

চিকিৎসা

কার্ডিয়াক ফাংশন উন্নতির জন্য চিকিৎসা করা হয়। বুকে ব্যথার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ সেবনের পাশাপাশি লাইফস্টাইল পরিবর্তন করতে হবে। তবে ওষুধে কাজ না হলে অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হবে। প্রয়োজনে ডিভাইস প্রতিস্থাপন করার পরামর্শ দিতে পারেন চিকিৎসক। 

প্রতিকার

প্রতিদিন খাবারে লবণের পরিমাণ ২ মিলিগ্রাম থেকে ৩ মিলিগ্রামের মধ্যে রাখা। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সপ্তাহে পাঁচ দিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা। ধূমপান বর্জন করা। দেহের উচ্চতা অনুযায়ী স্বাস্থ্যকর ওজন রাখা। মানসিক চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করা। ডায়াবেটিস, উচ্চ কোলেস্টেরল ও উচ্চ রক্তচাপের মতো সমস্যা থাকলে নিয়মিত ওষুধ সেবন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া। প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা ঘুমানো। 

আগামীকাল পড়ুন: কফি ও ডায়াবেটিস