কেন খাবেন আপেল, বিটরুট ও গাজর দিয়ে তৈরি এবিসি জুস

আপেল, বিট ও গাজর—স্বাদে এবং ধরনে ভিন্নতা থাকলেও পুষ্টিগুণের বেলায় তিনটিই অনন্য। তাই ফল কিংবা সবজি, কাঁচা অথবা রান্না করা—স্বাস্থ্যসচেতন যে কারও পছন্দের তালিকায় খুঁজে পাওয়া যায় এ তিনটি খাবার। তবে মজার বিষয় হলো, এই তিন ফল ও সবজির মিশ্রণে তৈরি জুসটি এককথায় দুর্দান্ত। আর এ জুসকে ডাকা হয় ‘এবিসি জুস’ নামে। আপেলের ইংরেজি আদ্যক্ষর ‘এ’, বিটরুটের ‘বি’ ও গাজর বা ক্যারটের আদ্যক্ষর ‘সি’ দিয়ে হয়েছে এই নামকরণ। জেনে নিন এর জাদুকরি গুণের কথা।

আপেল, বিটরুট ও গাজরের মিশ্রণে তৈরি এবিসি জুস এককথায় দুর্দান্ত

যেভাবে বানাবেন এবিসি জুস

উপকরণ: ১টি মাঝারি আকারের আপেল, ১টি মাঝারি আকারের গাজর, অর্ধেক বিটরুট, আদা, ২ কাপ পানি, ১ চা–চামচ লেবুর রস ও ১ টেবিল চামচ মধু।

প্রণালি: আপেল, গাজর ও বিটরুট ছোট ছোট করে কেটে নিন। এরপর ব্লেন্ডারে এর সঙ্গে ২ কাপ পানি যোগ করে কিছুক্ষণ ব্লেন্ড করুন। যতক্ষণ না পুরোপুরি মিশ্রিত হচ্ছে, ততক্ষণ ব্লেন্ড করুন। মিশ্রণের সঙ্গে ১ চা–চামচ লেবুর রস, ১ টেবিল চামচ মধু যোগ করুন। আবার কয়েক সেকেন্ড ব্লেন্ড করে নিন। সবশেষে ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে এবিসি জুস।

এবিসি জুসের পুষ্টিগুণ

স্বাস্থ্যসচেতনদের কাছে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে এবিসি জুস। প্রতি ১০০ মিলিগ্রাম এবিসি জুসে থাকে ৪৫-৫০ কিলোক্যালরি। ১০-১২ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৮-৯ গ্রাম চিনি, শূন্য দশমিক ৫ গ্রাম প্রোটিন। এর সঙ্গে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ তো থাকেই।

এবিসি জুস খেলে যেসব উপকার পাবেন

বিষাক্ত পদার্থ দূর হয়

রক্তের শ্বেত রক্তকণিকা ও হিমোগ্লোবিনের উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে এবিসি জুস। শ্বেত রক্তকণিকা শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। আর রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে শরীর দ্রুতই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। এ ছাড়া শরীরের নিয়মিত কার্যক্রম চালাতে বড় ভূমিকা পালন করার পাশাপাশি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থও দূর করে।

উজ্জ্বল ত্বক এবং স্বাস্থ্যকর চুল

এবিসি জুস ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্যে বেশ ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এই জুসে থাকা ভিটামিন ও খনিজ ত্বক নমনীয় রাখে। ত্বকের বলিরেখা কিংবা বার্ধক্যজনিত লক্ষণগুলো অনেকাংশেই দূর করে। এ ছাড়া চুলের স্বাস্থ্যকর বৃদ্ধি ও উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে।

পাকস্থলীর কার্যকারিতা বাড়ায়

এবিসি জুসে থাকা প্রতিটি উপাদানই উচ্চ মাত্রার ফাইবার বা আঁশসমৃদ্ধ। যা হজমে যেমন সহায়তা করে, তেমনই বিপাক প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে বেশ সহায়তা করে এই জুস। এ ছাড়া চোখের ক্লান্তি কমায় ও দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

ওজন কমাতে সাহায্য করে

অন্যান্য চিনিযুক্ত পানীয়র সঙ্গে এবিসি জুসের তুলনাই চলে না। নিঃসন্দেহে বেশ স্বাস্থ্যকর। গাজরে থাকা পটাশিয়াম অতিরিক্ত লবণাক্ত খাবারের চাহিদা কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া জুসে থাকা আঁশের কারণে পেট ভরা ভরা লাগে। ফলে বেশ অনেকটা সময় ক্ষুধা লাগে না।

সতর্কতা

অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়। স্বাস্থ্যের জন্য ভালো হলেও এবিসি জুস অতিরিক্ত খেলে দেখা দিতে পারে বেশ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। কারও কারও গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিটরুটে থাকা অতিরিক্ত শর্করা রক্তে চিনির পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে। ডায়াবেটিক রোগীরা এই জুস খাওয়ার আগে সতর্ক থাকবেন, চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে নেওয়া সবচেয়ে ভালো। অ্যালার্জির সমস্যায় ভুক্তভোগীরাও জুসটি খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

সূত্র: হেলথলাইন