আমাদের শরীরের সব হাড়ের জয়েন্ট বা অস্থিসন্ধি এক রকম নয়। কোনো কোনোটি একেবারে অনড়, যেমন অন্তঃকশেরুকীয় অস্থিসন্ধি, আবার কোনোটি সহজে সঞ্চালন করা যায়, যেমন হাত ও পায়ের অস্থিসন্ধি। নানা কারণে এসব অস্থিসন্ধিতে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।
একটি পরিচিত সমস্যা হলো ফ্রোজেন শোল্ডার। এর ফলে কাঁধের পেশি ও টেনডনে প্রদাহ হওয়ায় ব্যথা করে, কাঁধের অস্থিসন্ধি নাড়াতে সমস্যা হয়।
একিলিস টেনডিনাইটিস বা প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিস নামের সমস্যায় পায়ের গোড়ালি এবং পায়ের পাতার পেশি ও টেনডনে প্রদাহ হয়। এতে গোড়ালিতে ব্যথা করে।
আঙুল ও হাতের তালুর পেশি ও টিস্যু সংকুচিত হলে হঠাৎ আঙুল বাঁকা হয়ে যায়, আর সোজা করা যায় না। একে বলে ট্রিগার ফিঙ্গার।
হাত ও আঙুলের ত্বক মোমের মতো পুরু হয়ে যেতে পারে। পায়ের সন্ধিতে জটিল সমস্যা হয়, যার নাম চারকোট জয়েন্ট।
জীবনযাপন পরিবর্তনের মাধ্যমে বেশির ভাগ সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব।
ওজন কমাতে হবে। শর্করাযুক্ত খাবার কমিয়ে শাকসবজি, ফল, গোটা খাদ্যশস্য, চর্বিহীন মাংস, মাছ, বাদাম ও বীজজাতীয় খাবার খেতে হবে।
হাড়ের সন্ধির ওপর চাপ কমাতে ওয়াকিং স্টিক, ব্রেচ, নি–ক্যাপ, কোমরে বেল্ট ও কুশনযুক্ত জুতা ব্যবহার করা যেতে পারে।
একটানা একই ভঙ্গিতে বসে থাকা ঠিক নয়। এক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে অন্তত পাঁচ মিনিট হাঁটাহাঁটি করবেন। সিঁড়িতে ওঠা-নামা বেশি না করে প্রয়োজনে লিফট ব্যবহার করতে হবে।
ধূমপান ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকতে হবে।
নারীরা দীর্ঘদিন জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খাবেন না। গর্ভাবস্থায় নারীরা উঁচু হিলযুক্ত জুতা পরবেন না। প্রসবের পর দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকবেন না।
ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যায়াম বাড়িতে করা যায়। অবস্থা বিবেচনায় চিকিৎসক প্রয়োজনে ব্যথানাশক ওষুধ ও ইন্ট্রাআর্টিকুলার ইনজেকশন ইত্যাদি দিতে পারেন।
এম ইয়াছিন আলী, চিফ কনসালট্যান্ট ও চেয়ারম্যান, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ধানমন্ডি