ফুলকপি
ফুলকপি

থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে কি ফুলকপি খাওয়া নিষেধ

অনেকেরই ধারণা, থাইরয়েডের সমস্যা বা গলগণ্ড থাকলে ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রকলি ইত্যাদি সবজি খাওয়া নিষেধ। আসলে কি থাইরয়েডের সমস্যায় কোনো সবজি বা খাবারদাবারে নিষেধাজ্ঞা আছে? আসুন, জেনে নিই এ-বিষয়ক কিছু ভুল ধারণা সম্পর্কে—

‘থাইরয়েডের রোগ থাকলে ফুলকপি খাওয়া যাবে না’

ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রকলি, ব্রাসেলস স্প্রাউট ইত্যাদি হলো ক্রুসিফেরাস গোত্রের সবজি। এসব সবজিতে কিছু উপাদান থাকে, যা থাইরয়েড গ্রন্থিকে আয়োডিন ব্যবহারে সামান্য বাধা দেয়। কিন্তু আসলে থাইরয়েডের কার্যক্রম ব্যাহত করতে যে পরিমাণ ক্রুসিফেরাস সবজি খেতে হবে, তা কখনো কারও পক্ষে সম্ভব নয়। মানে দৈনন্দিন জীবনে আমরা এসব সবজি যে পরিমাণে খাই, তা একেবারেই নিরাপদ; বরং ব্রকলি ফলিক অ্যাসিডের চমৎকার উৎস, ফুলকপি ও বাঁধাকপিতে আছে প্রচুর ফ্ল্যাভনয়েড, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন। এই শীতে এসব সবজি না খেলে আপনি বরং এসব উপকার থেকে বঞ্চিত হবেন। তাই থাইরয়েডের সমস্যা থাকলেই যে এসব সবজি খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হবে, তা একটি ভুল ধারণা।

‘থাইরয়েডের সমস্যা কমাতে আয়োডিন খেতে হবে’

আয়োডিনের সঙ্গে থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতার একটি গূঢ় সম্পর্ক আছে বটে, তাই বলে এর মানে এই নয় যে সব থাইরয়েড রোগই আয়োডিনের অভাবজনিত হয়েছে; বরং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে থাইরয়েডের রোগ একটি অটোইমিউন সমস্যা, মানে আমাদের ইমিউন সিস্টেমের জটিলতার কারণে সৃস্ট। খুব কম ক্ষেত্রেই তা আয়োডিনের অভাবে ঘটে, বিশেষ করে আজকাল যেখানে খাবার লবণ থেকে শুরু করে অনেক খাবারই আয়োডিনযুক্ত করা হয়েছে। অনেকে থাইরয়েডের সমস্যা কমাতে আয়োডিন সাপ্লিমেন্ট বড়িও সেবন করেন। আসলে এসবের তেমন কোনো ভূমিকা নেই।

‘হাইপোথাইরয়েডিজম থাকলে মোটা তো হবই’

হাইপোথাইরয়েডিজম বা থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা কম থাকলে এর একটি উপসর্গ হলো ওজন বৃদ্ধি। তার মানে এই নয় যে হাইপোথাইরয়েড হলে আপনি কখনোই ওজন কমাতে পারবেন না। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, ক্যালরি কমানো এবং নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে আপনি হাইপোথাইরয়েড হলেও সঠিক ও আদর্শ ওজন বজায় রাখতে পারবেন।

ডা. তানজিনা হোসেন: সহযোগী অধ্যাপক, এন্ডোক্রাইনোলজি ও মেটাবলিজম বিভাগ, গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ, ঢাকা