ঘুমের সঙ্গে কি খাবারের সম্পর্ক আছে? বিকেলে নাশতায় কী খেলেন বা রাতের খাবারের মেনুর সঙ্গে রাতে ঘুম কমবেশি হওয়ার কী সম্পর্ক? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আপনার ঘুম কেমন হবে, তা অনেক ক্ষেত্রেই নির্ভর করে খাবারের ওপর। চটজলদি জেনে নেওয়া যাক রাতে ভালো ঘুমের উপায়।
ভিটামিন ডি ঘুমের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ভিটামিন ডির ঘাটতি থাকলে সহজে ঘুম আসে না। ভিটামিন ডির ভালো উৎস ডিম।
আখরোট, কাঠবাদাম থেকে শুরু করে ফলমূল, শাকসবজি—সবই ঘুমের জন্য বেশ উপকারী। আখরোট ও কাঠবাদামে রয়েছে ট্রিপটোফ্যান, যা স্নায়ু ও মাংসপেশিকে শিথিল করে। অন্যদিকে ফলমূল, সবজি ইত্যাদি ভিটামিনের জোগান দেয়, যা ঘুমে সাহায্য করে।
ক্যাফেইন আপনার ঘুমে বাগড়া দিতে পারে। দু-একজনের বেলায় ব্যতিক্রম হলেও বেশির ভাগ মানুষই চা বা কফি খাওয়ার পর ঘুমাতে পারেন না। তাই সূর্য ডুবে যাওয়ার পর থেকে চা, কফি বা কোমল পানীয় থেকে দূরে থাকুন।
ট্রিপটোফ্যান এমন এক অ্যামিনো অ্যাসিড, যা সেরোটোনিন তৈরি করতে সাহায্য করে। আর সেরোটোনিন একটি নিউরোট্রান্সমিটার, যা ঘুম নিয়ন্ত্রণ করে। দুধ, ডিম ও বাদামের মতো খাবারে প্রচুর ট্রিপটোফ্যান থাকে, যা আপনাকে ভালো ঘুমাতে সাহায্য করবে।
শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিলে ঘুম ভালো হবে না। তাই সারা দিন, বিশেষ করে দিনের প্রথমার্ধে প্রচুর পানি খান। তবে ঘুমের ঠিক আগে বেশি পানি খাবেন না।
মানসিক চাপ বা উদ্বেগ ঘুমের অন্যতম শত্রু। ফলে মানসিক চাপ যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের সহায়তা নিন। মাঝেমধ্যে মানসিক চাপের বিভিন্ন কারণ থাকতেই পারে, কিন্তু সেটা যেন নিয়মে পরিণত না হয়।
ভালো ঘুমের জন্য অনেকে তাড়াতাড়ি রাতের খাবার সেরে ফেলেন। ফলে ঘুমানোর আগে কিছুটা ক্ষুধা লাগতে পারে। এ সময় অনেকে ভুল করে রান্নাঘর বা ফ্রিজ খুলে যা সামনে পান খেয়ে নেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সেটা হয় বিস্কুট বা চিনিযুক্ত খাবার। ফলে ঘুমের বারোটা বাজে। একই কারণে বেডরুমে কৌটায় বিস্কুট, চানাচুর ইত্যাদি রাখবেন না।
প্রতিদিন কিছুটা সময় শারীরিক পরিশ্রমের কাজ করুন। হাঁটুন অথবা ব্যায়াম করুন। ঘুমানোর আগে কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করে নিতে পারেন। প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যান। ঘুমের আগে হালকা প্রাকৃতিক মিউজিক শুনতে পারেন। মুঠোফোন নিয়ে বিছানায় যাবেন না। ঘুমের দুই ঘণ্টা আগে থেকে মুঠোফোন বা অন্য কোনো গ্যাজেট বন্ধ করুন। ঘুমানোর আগে কয়েক পৃষ্ঠা বই পড়তে পারেন বা কিছু লিখতে পারেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কতক্ষণ ঘুমাচ্ছেন তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আপনার ঘুমটা গভীর হচ্ছে কি না। তুলনামূলকভাবে কম সময় ঘুমালেও সেটা যদি গভীর ঘুম হয়, তা-ও শরীরের জন্য ভালো।