বুড়িয়ে যেতে কে চায়! সবাই চায় যৌবন ধরে রাখতে। এমনকি পুরাকালের রাজা যযাতি বার্ধক্য এড়াতে যৌবন ধার নিয়েছিলেন ছেলে পুরুর থেকে, হাজার বছরের জন্য। আর আমরা ৬০ পেরুলেই পৌঁছে যাই বার্ধক্যে। অনেকে অবশ্য তার আগেই বুড়িয়ে যান। এমনকি অনেকে তো ৪০ পেরোতেই হয়ে পরেন চালশে। আবার যারা শরীরের ঠিকঠাক যত্ন নেন, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করেন, তারা ৭০ পেরোলেও মনে হয়, বয়স বোধ হয় এখনো পঞ্চাশের কোঠায়। এখানে জেনে নিন অকালে বুড়িয়ে যাওয়া ঠেকাতে কোন কোন অভ্যাস রাখতে হবে নিয়ন্ত্রণে।
পর্যাপ্ত না ঘুমানো
কাজের চাপ এলে সবার প্রথমে আমরা আপস করি ঘুমের সঙ্গে। একটু কম ঘুমিয়ে সে সময় অতিরিক্ত কাজ সারি। এমনকি প্রয়োজন ছাড়াও মাঝেমধ্যে ঘুমের পরিমাণ কমিয়ে দিই। স্রেফ বাড়তি সময় মোবাইলফোন ঘাঁটতে বা ভিডিও দেখতে রাত জাগি। অথচ ঘুম আপনার শরীরের জন্য অপরিহার্য।
স্বাস্থ্যকার খাবারে আপস
ঘুমের মতো প্রায়ই আমরা খাবারের সঙ্গেও আপস করি। ফলে বেড়ে যায় শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা, অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পরে বিপাক প্রক্রিয়া। বেড়ে যায় ওজন। শুধু তাই নয়, খাওয়াদাওয়ার অনিয়মের কারণে আপনার শরীরের নানা রোগব্যাধি বাসা বাঁধে।
শারীরিক পরিশ্রম না করা
ব্যস্ততার কারণে অনেকেই শরীরচর্চার জন্য আলাদা সময় দিতে পারেন না। বিশেষ করে যারা এমন চাকরি বা কাজ করেন, যেখানে সারাদিন বসে থাকতে হয়। বলার মতো শারীরিক পরিশ্রম হয় না বলে তৈরি হয় নানা রোগের ঝুঁকি। এমনকি হতে পারে ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ।
অনিয়ন্ত্রিত উদ্বেগ
এখন মানুষের জীবনধারাই এমন, তাতে প্রতিদিনই নানা বিষয়ে উদ্বেগ ও মানসিক চাপ সামলাতে হয়। হ্যাঁ, আপনার মস্তিষ্ক সেসবের চাপ নেওয়ার উপযোগী, কিন্তু নিয়মিত নয়। আপনাকে যদি প্রতিদিন এসব সামলাতে হয়, তাহলে শরীরে–মনে এর প্রভাব পরবেই।
অপরিমিত চা–কফি
চা–কফি আপনার শরীরের জন্য ভালোই। এসবের আছে নানা উপকার। শরীর সতেজ রাখতে, মন চাঙা করে তুলতে এসব রীতিমতো পটু। মুহুর্তে বাড়ায় কাজের স্পৃহা। তবে অতিরিক্ত চা–কফি পান করলে তাতে হবে হিতে বিপরীত।
মৌসুমী খাবার উপেক্ষা
অনেকেই কেবল পছন্দের ফলমূল ও শাকসবজিই খান। অথচ মৌসুমী ফলমূল ও শাকসবজি নিয়মিত খাওয়া প্রয়োজন। কারণ, যেসব ফল বা শাকসবজি যে মৌসুমে ফলে, ওসব ফল বা শাকসবজি সেই মৌসুমের আবহাওয়ার জন্য বিশেষ উপকারী।
চিকিৎসকের পরামর্শে ডায়েট
মানুষ সবসময় চলতি রীতিমাফিক চলতে পছন্দ করে। এমনকি ডায়েট মেনে চলার ক্ষেত্রেও নিত্যনতুন রীতির চল দেখা যায়। অনেকে না বুঝেই সেসব মানতে শুরু করে দেন। মনে রাখবেন, ডায়েট ঠিক করার জন্য অবশ্যই চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করে নেবেন।
খেতে হবে প্রতি বেলায়
অফিসে খুব কাজের চাপ। কিংবা ব্যবসার কাজে দম ফেলতে পারছেন না। দুপুরের খাবারটা বাদ দিয়ে একেবারে সন্ধ্যায় খেলেন। কিংবা সকালে না খেয়েই বের হয়ে গেলেন। এটা অনেকেই করেন। মনে করেন, একবেলাই তো। কিন্তু আপনার শরীরের জন্য সেটা জ্বালানি ছাড়া গাড়ি চালানোর মতো। খাওয়ার ব্যাপারে সর্বদা সময় মেনে চলুন।
ছেড়ে দিন ধূমপান
এটা অপরিহার্য। শরীর ঠিক রাখতে হলে ধূমপান করা যাবে না। যদি এ বদঅভ্যাস থাকেও, তা ছাড়তে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। একই কথা প্রযোজ্য মদ্যপানের ক্ষেত্রেও। কোনোটিই আপনার শরীরের কোনো উপকারে আসে না। কেবল রোগব্যাধি বাঁধিয়ে আপনাকে বুড়িয়ে যেতে সাহায্য করা ছাড়া।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া