শীতের অন্যতম অনুষঙ্গ শিমের বিচি। চট্টগ্রাম অঞ্চলে ডাকে ‘খাইসসা’ নামে। এই অঞ্চলের মানুষের খুবই প্রিয় খাবার শিমের বিচি। নানা ধরনের মাছের সঙ্গে তো খায়ই, শুঁটকির সঙ্গেও তাদের খুবই প্রিয়।
যাঁরা এই দুর্মূল্যের বাজারে গরুর মাংস কিনতে পারেন না বলে আফসোস করেন; তাঁদের বলছি, ১০০ গ্রাম গরুর মাংসে যে পরিমাণ অর্থাৎ ২২.৬ গ্রাম প্রোটিন আছে, একই পরিমাণ শিমের বিচিতে তা আছে ২৪.৯ গ্রাম। অথচ আমাদের দেশে অনেকে প্রোটিনের অভাবজনিত রোগে ভোগেন। যেমন—
● বাড়ন্ত বয়সে প্রোটিনের অভাবে দেহ সুগঠিত হয় না অর্থাৎ উচ্চতা কম হয়, দেহের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।
● দেহের ক্ষয়পূরণ হয় না।
● হাড়ের গঠন মজবুত হয় না। ফলে কর্মক্ষমতা কমে যায়।
● হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যায় এবং দেহ দুর্বল হয়ে পড়ে।
প্রোটিনের অভাবে কোয়াশিয়রকর নামে একধরনের রোগ হয়। এ রোগে দেহের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। শরীরের ওজন কমে যায়, পানি জমে। হাত-পা শুকিয়ে যায়, পেট বড় হয়ে যায়। বাড়ন্ত ছেলেমেয়েদের স্মরণশক্তি কমে যায় এবং পড়াশোনা ও খেলাধুলায় আগ্রহ থাকে না। বর্তমানে আমাদের দেশে অনেক শিশু প্রোটিনের অভাবে ভুগছে। অনেক দামি খাবারে নয়, কম দামি খাবারেও অনেক পুষ্টি আছে, যা শিমের বিচির পুষ্টিগুণ দেখেই বোঝা যায়।
যাঁরা নিরামিষভোজী, মাছ বা মাংস, ডিম, দুধ ধর্মীয় কারণে খেতে চান না, তাঁদের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করবে এই শিমের বিচি। ভেজিটেবল প্রোটিনে ভরা এই খাবার শরীরে প্রোটিনের দরকার এমন সব মাংসপেশিকে যথাযথ প্রোটিনের জোগান দেয়।
এ ছাড়া শিমের বিচিতে আছে ক্যালসিয়াম, যা হাড়কে শক্ত করে। বয়স বাড়লে যে কেউ অস্টিওপোরোসিসের মতো রোগে আক্রান্ত হতে পারে। নারীদের আক্রান্তের হার বেশি। এ ক্ষেত্রে শিমের বিচি খুবই উপকারী। এতে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড।
শিমের বিচিতে আঁশের পরিমাণ বেশি থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করে। স্তন্যদায়ী মায়েদের জন্য ভীষণ উপকারী, দুধ বাড়ে। যাঁদের ওজন বেশি, তাঁদের ওজন কমাতে সাহায্য করে।
বর্তমানে ক্যানসারের প্রকোপ বিশ্বব্যাপী আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। আর শিমের বিচিতে আছে আট ধরনের ফ্ল্যাভোনয়েড, যা প্রতিকার করতে না পারলেও ক্যানসার সেলের প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। হার্টের সুরক্ষায় বেশ কার্যকর এই শিম বিচি।
● যাঁদের কিডনির সমস্যা আছে।
● যাঁদের রক্তে ইউরিক অ্যাসিড বেশি।
● যাঁদের পিত্তথলিতে পাথর আছে।
আগামীকাল পড়ুন: এ সময়ে জলবসন্ত