ইদানীং শীতে কারও ঘুম থেকে উঠে মেঝেতে পা রাখতেই পায়ের তলায় তীব্র ব্যথা হয়। আবার অনেকক্ষণ বসে থাকার পর উঠে দাঁড়ালেই পায়ের তলায় তীব্র ব্যথা হয়। একটু হাঁটাহাঁটি করলে ব্যথা কিছুটা কমে আসে। এ ক্ষেত্রে প্রথমে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে হয়, তারপর আস্তে আস্তে ব্যথা কমে আসে।
এমন ব্যথা সাধারণত দুটি কারণে হয়ে থাকে—
১. প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিস: ব্যান্ডের মতো যে লিগামেন্ট দিয়ে পায়ের সামনের দিকের ছোট ছোট হাড় পেছনের দিকে গোড়ালির হাড়ের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে, তাকে প্ল্যান্টার ফাসা বলে। শরীরের ওজন যেন সরাসরি পায়ের হাড়ের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে না পারে, সে জন্য এই ব্যান্ড কাজ করে। এই ব্যান্ডে প্রদাহ হলে গোড়ালিতে ব্যথা অনুভূত হয়। তখন এটিকে বলে প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিস।
২. ক্যালকেনিয়াস স্পার: এক্স-রে রিপোর্টে দেখা যায়, পায়ের গোড়ালির প্রধান হাড় ক্যালকেনিয়াসের নিচের দিকে ছোট হুকের হাড় বৃদ্ধি পেয়েছে, যাকে চিকিৎসার পরিভাষায় ক্যালকেনিয়াস স্পার বলে। এতে শীতকালে এ ধরনের ব্যথা আরও তীব্র হতে পারে।
পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে ও নির্ধারিত কিছু ব্যায়াম করতে হবে। ব্যথা থাকা অবস্থায় অন্য কোনো ব্যায়াম করা যাবে না।
ওষুধের পাশাপাশি ফিজিওথেরাপিতে এ ধরনের ব্যথায় ভালো ফল পাওয়া যায়। কিছু নিয়ম পালন করলে আরাম পাবেন।
● সব সময় নরম জুতা ব্যবহার করতে হবে। হাঁটাচলার সময় হিল কুশন ব্যবহার করবেন। পেছনে খোলা থাকে, এমন জুতা পরা ভালো। হাই হিল জুতা পরা নিষেধ।
● শক্ত স্থানে খুব বেশি সময় দাঁড়িয়ে থাকা যাবে না বা শক্ত স্থানে বেশি হাঁটাচলা করাও অনুচিত।
● ভারী কোনো জিনিস বহন করা যাবে না। যেমন বেশি ওজনের বাজারের থলে, পানিভর্তি বালতি ইত্যাদি বহন করা যাবে না।
● সিঁড়ি ব্যবহারের সময় মেরুদণ্ড সোজা রেখে হাতে সাপোর্ট দিয়ে ধীরে ধীরে উঠতে হবে, নামতে হবে এবং যথাসম্ভব গোড়ালির ব্যবহার কম করতে হবে।
● কয়েক দিন পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে ও নির্ধারিত কিছু ব্যায়াম করতে হবে। ব্যথা থাকা অবস্থায় অন্য কোনো ব্যায়াম করা যাবে না।
●বেশিপ্রদাহহলেগোড়ালিরপেছনেবরফদেওয়াউত্তম।ওজননিয়ন্ত্রণেরাখতেহবে।
এম ইয়াছিন আলী, ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ধানমন্ডি, ঢাকা
আরও পড়ুনঃ