মাথায় গুরুতর আঘাতের যত ঘটনা ঘটে, তার বেশির ভাগই ঘটে সড়ক দুর্ঘটনায়। আবার সড়ক দুর্ঘটনায় যত মানুষ মারা যায়, তার ৭০ শতাংশই হয় মাথার আঘাতের কারণে। তবে খেলতে গিয়ে, বাথরুমে বা সিঁড়িতে পড়ে, মারামারিতে, শক্ত কিছু মাথার ওপর পড়ে, শিশুদের ক্ষেত্রে খাট থেকে পড়ে, শোকেস বা টিভি স্ট্যান্ড থেকে কিছু সরাসরি মাথার ওপর পড়েও মাথায় আঘাত পেতে পারে। কেউ মাথায় আঘাত পেলে যেসব বিপদের লক্ষণ খেয়াল রাখতে হবে:
১. তীব্র মাথাব্যথা।
২. নাক, মুখ ও কান দিয়ে তরল পদার্থ বা রক্ত আসা।
৩. চোখের চারপাশে কালচে হওয়া, চোখে ঝাপসা দেখা।
৪. বেশি ঘুম ঘুম ভাব।
৫. অজ্ঞান হওয়া।
৬. অস্থিরতা বা অস্বাভাবিক আচরণ করা।
৭. বারবার বমি করা বা বমি বমি ভাব হওয়া।
৮. শ্বাসপ্রশ্বাস কমে যাওয়া।
৯. খিঁচুনি হওয়া।
১০. কথা বলতে সমস্যা হওয়া।
প্রথমে খেয়াল করতে হবে শ্বাসপ্রশ্বাস ঠিক আছে কি না।
শ্বাসপ্রশ্বাস ঠিক থাকলে মাথার যেখানে আঘাত পেয়েছে, সেখান থেকে রক্তপাত হচ্ছে কি না, তা লক্ষ করতে হবে। প্রয়োজনে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে আঘাতের স্থান চেপে রাখতে হবে। তবে যদি মনে হয় মাথার হাড় ভেঙেছে, তাহলে আবার বেশি চাপ প্রয়োগ করা যাবে না, তাতে বেশি ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।
মস্তিষ্কে কতখানি আঘাত লেগেছে, তা আঘাতের ইতিহাস ও শারীরিক পরীক্ষা থেকে অনেকটাই ধারণা পাওয়া যায়। মাথার সিটি স্ক্যান, মেরুদণ্ড ও বুকের এক্স-রে যত দ্রুত করা যাবে, ততই রোগীর জন্য ভালো। তাতে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করতে সুবিধা হয়।
রোগী ঘাড়ে আঘাত পেয়ে থাকতে পারে মনে হলে রোগীকে শুইয়ে ঘাড় সোজা রেখে হাসপাতালে নিতে হবে।
কার কী ধরনের ইনজুরি হয়েছে, বাইরে থেকে বোঝা সম্ভব নয়, এ জন্য যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া জরুরি। রোগীকে নিউরো কেয়ার সেন্টার ও নিউরোসার্জারি বিভাগ আছে, এমন হাসপাতালে নিতে পারলে ভালো।
ডা. হিমেল বিশ্বাস: স্কয়ার হাসপাতাল, ঢাকা