মসলা হিসেবে অনেক আগে থেকেই জনপ্রিয় লবঙ্গ। বিশেষ করে মাংসে ব্যবহৃত হয় বেশি। খিচুড়ি, পোলাও থেকে শুরু করে মসলা চায়েও আজকাল লবঙ্গ খাওয়ার চল আছে। কোথাও আবার আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয় লবঙ্গ তেল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে এক–দুটি লবঙ্গ চিবালে অনেক উপকার। হৃদ্রোগ, ক্যানসারসহ জটিল সব রোগের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় লবঙ্গ। এবার জেনে নেওয়া যাক, খালি পেটে লবঙ্গ খাওয়ার সুনির্দিষ্ট কিছু উপকার।
লবঙ্গ হজমে সহায়তা করে। একইভাবে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে অ্যাসিডিটি কমাতেও সাহায্য করে। লবঙ্গ হজম শক্তি বাড়ায়। পাচক রসের নিঃসরণ উন্নত করতে ও পেট ফাঁপা বা ফোলা কমাতে সাহায্য করে। লবঙ্গে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা অন্ত্রে অবাঞ্ছিত ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলতে সাহায্য করে।
ইউজেনল হলো লবঙ্গের বেদনানাশক বৈশিষ্ট্য। নিয়মিত খালি পেটে লবঙ্গ খেলে মাইগ্রেন ও মাথাব্যথা কমে।
লবঙ্গে ম্যাঙ্গানিজ ও ফ্ল্যাভোনয়েডের মতো উপাদান থাকে, যা হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখতে সাহায্য করে। এই উপাদানগুলো হাড়ের টিস্যু মেরামত করতে সাহায্য করে। একইভাবে জয়েন্টের ব্যথা কমায়। পাশাপাশি বয়স্ক ব্যক্তিদের পেশির ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে।
শীতজনিত সর্দি, ব্রঙ্কাইটিস, সাইনাস, ভাইরাল ইনফেকশন সবই কমাতে পারে লবঙ্গ। লবঙ্গের অ্যান্টিভাইরাল ও রক্ত পরিশোধন বৈশিষ্ট্য রক্তের বিষ কমায়। তাই শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
শুকনা লবঙ্গের কুঁড়ি লিভারে প্রতিরক্ষামূলক প্রভাব ফেলে। ভারতীয় পুষ্টিবিদ আরোশি গার্গের মতে, এটি নতুন কোষের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। লিভারকে ডিটক্স করে।
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখে লবঙ্গ। ইনসুলিন নিঃসরণ উন্নত করে। বিটা কোষের কার্যকারিতা বাড়ায়।
যাঁরা মর্নিং সিকনেসে ভুগছেন, তাঁরা খালি পেটে লবঙ্গ চিবিয়ে খেলে উপকার পেতে পারেন। পুষ্টিবিদেরা জানান, যখন এটি মুখের লালার সঙ্গে মিশে যায়, তখন তা নির্দিষ্ট কিছু এনজাইম তৈরি করে, যা বমি বমি ভাব কমাতে সাহায্য করে।
দাঁতের ব্যথা উপশমকারী হিসেবে যুগ যুগ ধরে লবঙ্গ ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এ জন্যই আজকাল অনেক টুথপেস্টের বিজ্ঞাপনে বলা হয় যে সেই টুথপেস্টে লবঙ্গও রয়েছে। ব্যথা উপশমকারী বৈশিষ্ট্যগুলোর পাশাপাশি এটি মুখ ও মাড়ির প্রদাহ কমায়। নিশ্বাসের দুর্গন্ধের সঙ্গে লড়াই করতে সহায়তা করে।
ঘুম থেকে ওঠার পর শ্বাস সতেজ করতে সাহায্য করে লবঙ্গ। এতে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যগুলো সারা দিন মুখের ভেতরের অংশ জীবাণুমুক্ত রাখতেও সহায়ক।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস