অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কী খাবেন 

অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায় হলো, উচ্চ ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া। এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর চর্বি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবারসহ পলিফেনল নামের শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্টও উপকারী। 

প্রিবায়োটিক অন্ত্রে উপকারী অণুজীবের বৃদ্ধি উৎসাহিত করে। আর প্রোবায়োটিক হলো উপকারী জীবন্ত অণুজীব, যা অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম বজায় রাখতে সাহায্য করে থাকে। ডায়েটে প্রিবায়োটিক যোগ করতে কলা, ওটস, বেরি, রসুন যোগ করতে হবে। প্রোবায়োটিক হলো দই, আচার, পান্তা কিংবা গাঁজনকৃত খাবার। এ ছাড়া কিমচি, কেফির, কম্বুচায় প্রোবায়োটিক থাকে।

ভিটামিন ডি অন্ত্র-সম্পর্কিত প্রদাহ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে একটি সুস্থ ইমিউন সিস্টেম (রোগ প্রতিরোধক্ষমতা) তৈরি করে। তবে ভিটামিন ডি-সমৃদ্ধ খাবার খুব কমই পাওয়া যায়। ভিটামিন ডি পাওয়া যায় রোদ বা সূর্যালোক থেকে। এ ছাড়া খাবারের মধ্যে রয়েছে ডিমের কুসুম, কমলা, লেবু, সামুদ্রিক মাছ, মাশরুম।

ভিটামিন সি অন্ত্রে হজমের সমস্যা দূরীকরণে সাহায্য করে। এ ছাড়া আয়রনের শোষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ভিটামিন সি’র জন্য নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন পেয়ারা, টমেটো, পেঁপে, মরিচ, জাম্বুরা ও বিভিন্ন ধরনের টকজাতীয় ফল।

অন্ত্রের সুপারফুড হিসেবে পরিচিত ভিটামিন এ। এটির অভাবে অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমে পরিবর্তন হয়, ব্যাকটেরয়েড ভালগাটাসের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। ভিটামিন এ-যুক্ত খাবারের মধ্যে রয়েছে গাঢ় রঙের কমলা, হলুদ শাকসবজি, ডিম, কলিজা ইত্যাদি। 

জিংকের ঘাটতি মাইক্রোবায়োমে পরিবর্তন ঘটাতে পারে, যা ইমিউন ফাংশন দুর্বল করে। জিংকযুক্ত খাবারের মধ্যে রয়েছে লাল মাংস, মুরগি, গোটা শস্য, বাদাম, বীজ, সামুদ্রিক খাবার, দুগ্ধজাত খাবার ইত্যাদি।

পলিফেনল একধরনের ফাইটো কেমিক্যাল, যাতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বেশি। যেসব খাবারে পলিফেনল বেশি থাকে সেগুলো হলো, কোকো, বেগুনি আঙুর, কালো ও সবুজ চা, জলপাই, পেঁয়াজ, সাইট্রাস ফল ইত্যাদি।

হাইড্রেশন হজমের কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ডিহাইড্রেশন কোষ্ঠকাঠিন্য বা বদহজমকে  আরও জটিল করে তুলতে পারে।

পর্যাপ্ত তরল গ্রহণ বৃদ্ধি করলে হজমের গতি বাড়বে। এ ছাড়া ইরিটেবল বাওল সিন্ড্রোমের মতো লবণগুলো লাঘব করার জন্যও পর্যাপ্ত পানি খাওয়া জরুরি। হজম, পুষ্টি শোষণ, পরিবহন, বর্জ্য অপসারণ ও থার্মোরেগুলেশনের কাজ করে পানি।

ফাইবার প্রিবায়োটিক সরবরাহ করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। কিছু দ্রবণীয় ফাইবার রয়েছে, যেমন ওটসমিল, কলা, মিষ্টি আলুর মতো খাবারে। ফাইবার অন্ত্রের গতিশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে খাবারের চলাচলে অবদান রাখে।

যেসব খাবারে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি যৌগ বেশি থাকে, তা পরিপাকতন্ত্রে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। প্রদাহবিরোধী খাবারগুলো হলো চর্বিযুক্ত মাছ, হলুদ, পালংশাক ও বেরিজাতীয় খাবার।

লিনা আকতার, পুষ্টিবিদ, রাইয়ান হেলথ কেয়ার হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার