ডেঙ্গুসহ নানা মৌসুমি রোগবালাইয়ের প্রকোপ বাড়ছে। এ সময় মশা কিংবা অন্যান্য পোকামাকড় থেকে বাঁচতে আমরা অনেক সময় ঘরে অ্যারোসল, কয়েলসহ নানা ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করি। সম্প্রতি অফিস-বাসায় পোকামাকড় দমনের জন্য পেশাদার কিছু প্রতিষ্ঠানও গড়ে উঠেছে। পোকামাকড় দূর করতে যেকোনো রাসায়নিক ব্যবহারের ক্ষেত্রেই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। কেননা, এসব রাসায়নিক পোকামাকড় মারতে ব্যবহৃত ক্ষতিকর উপাদান আমাদের শরীরেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
এ বিষয়ে বারডেম জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আশরাফ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘পেস্টিসাইড বা কীটনাশক ব্যবহারে অসাবধানতার কারণে আমাদের ফুসফুস বা শ্বাসনালিতে নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের ঝুঁকি বেশি। দীর্ঘ মেয়াদে এর কারণে রক্তকণিকা উৎপাদনও কমে যেতে পারে। অনেকের শ্বাসকষ্ট হয়, অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন হয়। চর্মরোগ হতে পারে। সে জন্য সবচেয়ে ভালো হয়, যদি এ ধরনের কীটনাশক ঘরে খুব অল্প পরিমাণে ব্যবহার করা যায়। যিনি স্প্রে করবেন, তিনি যেন অবশ্যই মাস্ক পরে নেন।’
একসঙ্গে অনেক ওষুধ দিয়ে সব পোকামাকড় দূর করে ফেলবেন, এমনটা প্রত্যাশা না করাই ভালো; বরং অল্প পরিমাণে কীটনাশক টানা কয়েক দিন ব্যবহার করুন।
বাসায় কোন পোকার উপদ্রব হচ্ছে কিংবা আপনি কী ধরনের পোকা মারতে চান, সেটা আগে নিশ্চিত হোন। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিন। সব ওষুধ সব পোকার জন্য নয়।
ঘরবাড়ির জন্য সবচেয়ে কম ক্ষতিকর কীটনাশকটিই বেছে নেওয়া ভালো।
বাড়িতে শিশু থাকলে রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার না করতে পারলেই সবচেয়ে ভালো। এর চেয়ে বরং সচেতন হোন। আপনার ঘর ও আশপাশ পরিষ্কার রাখুন। প্রয়োজনে জানালায় নেট ব্যবহার করতে পারেন। খাটের নিচে অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র জমা করে রাখবেন না।
লেবেলবিহীন কিংবা অখ্যাত কোম্পানির তৈরি পোকা মারার ওষুধ ব্যবহার করবেন না। কর্তৃপক্ষের অনুমোদন আছে, শুধু এমন পণ্যই ব্যবহার করুন।
প্যাকেটের গায়ে লেখা ব্যবহারবিধি আগে ভালোভাবে পড়ে নিন।
এক ওষুধের সঙ্গে আরেক ওষুধ মেশাবেন না।
কয়েল, অ্যারোসলসহ যেকোনো ধরনের কীটনাশক শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।
ঘরে অ্যারোসল স্প্রে করা অবস্থায় কিংবা কয়েল জ্বালানো অবস্থায় কিছু খাবেন না।
অ্যারোসল বা কয়েল ব্যবহারের সময় খাবার ঢেকে রাখুন।
যেসব জায়গা আমরা হাত দিয়ে বেশি স্পর্শ করি, যেমন টেবিলেও ওপরের অংশ, বিছানা, চেয়ার—এগুলোর ওপর কীটনাশক ছিটাবেন না বা স্প্রে করবেন না
কীটনাশক দেওয়া অবস্থায় ঘরে না ঢোকাই শ্রেয়। দরজা-জানালা খুলে দিয়ে আগে ক্ষতিকর বাতাস বের হয়ে যেতে দিন। প্রয়োজনে ফ্যান ছেড়ে দিন।