সারা দিনের পুষ্টি উপাদানের জন্য ডিমের বিকল্প নেই বললেই চলে। কারণ, শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় সব পুষ্টিগুণ ডিমের মধ্যে পাওয়া যায় সহজে। একটা ডিম থেকে স্বাভাবিকভাবে ১৫৫ থেকে ১৬০ কিলোক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়। প্রোটিন, চর্বি, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন ডি, ফোলেট, কোলিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই, লেটিইন ও জি-অ্যাকজানথাইনের মতো উপাদান থাকে ডিমে।
বাজারে লাল ডিমের দাম কিছুটা বেশি হওয়ায় বেশির ভাগ মানুষ ভাবেন, লাল ডিমে পুষ্টিগুণ বেশি। আদতে তা নয়। লাল ও সাদা উভয় ডিমেই পুষ্টিগুণ প্রায় সমান। দাম নির্ভর করে মূলত ডিম দেওয়া মুরগির লালন–পালনের খরচের ওপর, পুষ্টিগুণের ওপর নয়।
চর্বি: ৪ দশমিক ৮ গ্রাম
কোলেস্টেরল: ১৮৬ মিলিগ্রাম
সোডিয়াম: ৭১ মিলিগ্রাম
পটাশিয়াম: ৬৯ মিলিগ্রাম
প্রোটিন: ৬ দশমিক ৩ গ্রাম
ক্যালসিয়াম: ২৮ মিলিগ্রাম
আয়রন: শূন্য দশমিক ৯ মিলিগ্রাম
ডিটামিন ডি: ১ মাইক্রোগ্রাম
কার্বোহাইড্রেট: শূন্য দশমিক ৪ গ্রাম
এ ছাড়া ওমেগা–৩–যুক্ত ডিমে উপকারী চর্বি বেশি থাকে। এ জন্য হৃদ্রোগ, কোলেস্টরল ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য এই ডিম বেশ ভালো।
সেদ্ধ ডিম: ডিম থেকে সবচেয়ে বেশি পুষ্টিগুণ পেতে হলে সেদ্ধ ডিমই খান। এতে ক্যালরি থাকে সবচেয়ে বেশি এবং সব পুষ্টিগুণ থাকে অটুট। তবে আধা সেদ্ধ ডিম শরীরের জন্য হতে পারে মারাত্মক ক্ষতিকর। বমি ও ডায়রিয়া শুরু হতে পারে আধা সেদ্ধ ডিম খেলে।
ভাজি কিংবা পোচ: ডিম ভাজি বা পোচও ভালো, তবে তা সেদ্ধ ডিমের মতো অত ভালো নয়। আর পোচে কুসুম প্রায় কাঁচা থেকে যায়। তবে খেয়াল রাখতে হবে তেলের ব্যবহার যেন সীমিত থাকে। ভালো হয় যদি ওয়াটার পোচ করে খাওয়া যায়। এতে তেল থাকে না।
কাঁচা ডিম: কাঁচা ডিম খেলে বেশি পুষ্টি পাওয়া যায়, এমন ধারণার কোনো ভিত্তি নেই। বরং এভিডিন নামক একধরনের প্রোটিন থাকে কাঁচা ডিমে, যা আমাদের শরীরে বায়োটিনকে কাজ করতে বাধা দেয়। সে কারণে ত্বক ও চুলের ক্ষতি হতে পারে কাঁচা ডিম খেলে।
এই দ্বিধাদ্বন্দের শেষ বোধ হয় নেই। তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে, সেদ্ধ ডিমের কুসুমের কোলেস্টেরল শরীরের জন্য খারাপ নয়, বরং তা মানবদেহের প্রতিদিনের কোলেস্টেরলের চাহিদার একটা অংশ পূরণে বেশ সহযোগিতা করে।
সূত্র: নিউট্রিশানিক্স ডটকম, এগইনফো
ডা. হিমেল বিশ্বাস, ক্লিনিক্যাল স্টাফ, স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড, ঢাকা