বিশ্বজুড়ে করোনার নতুন ধরনের প্রকোপ বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, পশ্চিমা দেশগুলোতে বড়দিনের ছুটি উপলক্ষে অনেক মানুষ একত্র হয়েছেন, ভ্রমণ করছেন—যা এই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। যদিও আমাদের দেশে এখনো করোনার নতুন ধরনের কথা শোনা যায়নি। তবু এ সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা খুবই জরুরি। কারণ, আক্রান্ত কেউ হাঁচি-কাশি দিলে তাঁর সূক্ষ্ম থুতুকণা (ড্রপলেট) বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। এই ড্রপলেটের মধ্যে ঠাসা থাকে ভাইরাস। যেসব জায়গায় এই কণাগুলো পড়ছে, সেসব জায়গা যদি আপনি হাতের স্পর্শ লাগে, সেটা হাতে আসবে। তারপর সেই অপরিষ্কার হাত আপনি নিজের অজান্তেই মুখে দেওয়ায় ভাইরাসটা শরীরে প্রবেশ করবে। হাত ছাড়াও খুব কাছ থেকে সেই কণাগুলো নিশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে ঢুকে আপনি সংক্রমিত হবেন।
আপনি যদি অন্য ব্যক্তিদের সঙ্গে বেশি সময় না কাটান, অন্যদের খুব কাছে না যান, আপনার সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কাও কমবে।
করোনা-পরবর্তী সামাজিক অনুষ্ঠানে করণীয় ও সতর্কতা নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুনির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে। চলুন, সেটাই আরেকবার মনে করে নিই।
আউটডোর অনুষ্ঠান, মানে যেখানে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রয়েছে, এমন ধরনের অনুষ্ঠান বদ্ধ ঘরের অনুষ্ঠানের তুলনায় সব সময় বেশি নিরাপদ।
মাস্কের কোনো বিকল্প নেই। মুখের সঙ্গে ভালোভাবে লেগে থাকে, এমন মাস্ক ব্যবহার করুন। মাস্ক ব্যবহার অভ্যাসে পরিণত করুন। মাস্ক শুধু করোনা নয়, বায়ুবাহিত অন্যান্য সংক্রামক রোগের সংক্রমণ ঠেকাতে কার্যকর।
হাঁচি বা কাশির সময় সব আদবকেতা মেনে চলার চেষ্টা করুন।
ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন। সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দ্বারা অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা দরকার। একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে হাত মেলানোর পর প্রয়োজনে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।
অবশ্যই করোনা টিকার ডোজ পূর্ণ করতে হবে। ব্যাপকভাবে ভ্যাকসিনেশনের কারণেই কিন্তু করোনা আর আগের মতো মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারছে না।
নিজে অসুস্থ হলে সব রকমের সামাজিক অনুষ্ঠান পরিহার করুন।
শিশু ও বয়স্কদের পাশাপাশি যাঁরা দীর্ঘমেয়াদি রোগ বা ক্যানসারের রোগী বা ইম্যুনোসাপ্রেসেন্ট মেডিসিন নিচ্ছেন, তাঁদের প্রতি বাড়তি নজর দিন। কাশি ও জ্বর দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ডা. মো. জুলকার নাঈম শাহরিয়ার, মেডিকেল অফিসার, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বাসাইল, টাঙ্গাইল