ডায়েট, ব্যায়াম ও ওজন কমানো–বাড়ানো নিয়ে পাঠকদের নির্বাচিত প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন বারডেম জেনারেল হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ ও বিভাগীয় প্রধান শামছুন্নাহার নাহিদ
প্রশ্ন: আমি একজন পুরুষ। বয়স ৩৫ বছর। আমি একটি বেসরকারি অফিসে ৯-৫টা চাকরি করি। কিন্তু আমার বাসা অফিস থেকে অনেক দূর। প্রতিদিন যাতায়াতেই ৩ ঘণ্টা নষ্ট হয়ে যায়। তাই সকালে নিয়মিত নাশতা করে বের হতে পারি না। অন্য দুবেলা ঠিকমতো খাবার খাই। প্রতি সপ্তাহে ২-৩ দিন নাশতা বাদ পড়ে যায়। এতে কী কোনো সমস্যা হতে পারে?
ইশতিয়াক, টঙ্গী
উত্তর: বলা হয়, সকালের নাশতা হবে রাজার মতো, রাতের খাবার প্রজার মতো। এর মানে হলো, সকালের খাবার খাওয়া শুধু জরুরিই নয়, শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কারণ, মানুষ যখন রাতে ঘুমিয়ে থাকে, তখন তার কোনো শারীরিক পরিশ্রম ও শক্তি খরচ করার দরকার হয় না। শুধু শরীরের ভেতরের বিভিন্ন অঙ্গের কাজ করতে সামান্য শক্তি লাগে, যাকে ‘বেজাল মেটাবলিক রেট’ বলে। রাতে কম খেলেও সমস্যা হয় না। কিন্তু রাতে দীর্ঘ সময় (৮-১০ ঘণ্টা) না খেয়ে থাকার কারণে ঘুম থেকে জেগে ওঠার পর শরীরে এনার্জিসহ বিভিন্ন পুষ্টির চাহিদা বেশি থাকে, আর তা পূরণ করতে সকালে সুষম খাবার খাওয়া জরুরি।
যদি কেউ সকালের নাশতা বাদ দেন, তাহলে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে আছে অ্যাসিডিটি, পেট ফাঁপা, অরুচি, আলসার। কাজ করার মনোযোগ ও ক্ষমতা একটু একটু করে কমতে থাকে। শরীরের ওজন ও এনার্জি কমে যেতে পারে। বিপরীতে অনেক সময় পর, অনেক খিদে নিয়ে দুপুরে বেশি খাওয়া হয়ে যায়। এতে দ্রুত ওজন বাড়তে থাকে। গ্লুকোজ কমে গিয়ে মেজাজ খিটখিটে হয়ে পড়ে, ঝিমুনি ভাব আসে। এমন আরও অনেক রোগের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে সকালে না খেলে।
আপনাকে যেহেতু প্রতিদিন লম্বা জার্নি করে অফিসে যেতে হয়, তাই সকালের নাশতা হিসেবে আপনি সহজ কোনো খাবার বেছে নিতে পারেন।
সকালের নাশতা খুব সহজে তৈরি করতে চিড়া-দুধ/দই-কলা, চিড়ার পরিবর্তে সাগু, খই, ওটস্, কর্নফ্লেক্স, পরিজ, পাউরুটি, চাপাটি ইত্যাদি খেতে পারেন।
রাতে খাবার তৈরি করে, ফ্রিজে রেখে সকালে খাওয়া যেতে পারে।
সকালে উঠতে দেরি হলে তৈরি করা নাশতা সঙ্গে নিয়ে বের হয়ে পড়ুন। নিজস্ব যানবাহন থাকলে যাতায়াতের পথে আর না থাকলে কাজের জায়গায় গিয়ে খেয়ে নিতে পারেন।
কাজের জায়গায় যদি স্বাস্থ্যকর খাবারের ব্যবস্থা থাকে, সেখান থেকেও খেতে পারেন।
যেভাবেই হোক সকালের নাশতা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি। তাই একদিনের জন্যও নাশতা বাদ দেওয়া অস্বাস্থ্যকর ও ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
পাঠকের প্রশ্ন পাঠানো যাবে ই–মেইলে, ডাকে এবং প্র অধুনার ফেসবুক পেজের ইনবক্সে।
ই–মেইল: adhuna@prothomalo.com
(সাবজেক্ট হিসেবে লিখুন ‘পাঠকের প্রশ্ন’)
ডাক ঠিকানা: প্র অধুনা,
প্রথম আলো, ১৯ কারওয়ান বাজার, ঢাকা ১২১৫। (খামের ওপর লিখুন ‘পাঠকের প্রশ্ন’), ফেসবুক পেজ: fb.com/Adhuna.PA