ভালো থাকুন

গর্ভাবস্থায় ‘মর্নিং সিকনেস’

অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় নারীর বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া সাধারণ বিষয়। সকালে এই উপসর্গ বেশি হয় বলে একে বলা হয় ‘মর্নিং সিকনেস’ বা সকালের অসুস্থতা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এসব সমস্যা প্রথম তিন–চার মাসের মধ্যে কমে যায় বা চলে যায়। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে এই সমস্যা আরও বেশি দিন থাকতে পারে।

কেন হয়

গর্ভাবস্থায় শরীরে হরমোনের নানা পরিবর্তন ঘটে। বিটা এইচসিজি নামের হরমোন প্লাসেন্টা বা অমরা থেকে নিঃসৃত হয় এবং এর মাত্রা বাড়তে থাকে। এই হরমোনই এসব লক্ষণের জন্য দায়ী।

কী করবেন

  • সকালে শুকনা খাবার যেমন মুড়ি, ড্রাই টোস্ট ইত্যাদি খাবেন।

  • একটু পরপর অল্প অল্প করে খাবেন।

  • ভাজাপোড়া, চর্বি–তেলযুক্ত খাবার, স্পাইসি খাবার এড়িয়ে চলা ভালো।

  • খাবারের মধ্যে অল্প পানি খেতে পারেন, খাবারের শেষে নয়।

  • দিনে কমপক্ষে ২ দশমিক ৫ লিটার পানি পান করতে পারেন।

  • চিকিৎসকের পরামর্শে নিরাপদ বমির ওষুধ সেবন করতে পারেন।

কখন উদ্বেগের

বমি কারও কারও ক্ষেত্রে এত বেশি যে অন্তঃসত্ত্বা নারীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়, কিছুই খেতে পারে না এবং পুষ্টির অভাব দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত বমির কারণে পানিশূন্যতা ও ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্যহীনতা হতে পারে। এই অবস্থাকে বলে হাইপারএমেসিস গ্রেভিডেরাম।

লক্ষণ

  • দীর্ঘ সময় ধরে বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া

  • পানিশূন্যতা

  • ওজন কমে যাওয়া

  • শরীরে লবণ পানির তারতম্য হওয়া

করণীয়

  • অতিরিক্ত বমি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে।

  • শিরাপথে স্যালাইন, বমি ও অ্যাসিডিটির ইনজেকশন নিতে হবে।

  • সঙ্গে ভিটামিন ‘বি’ কমপ্লেক্স, ভিটামিন ‘সি’ সাপ্লিমেন্টেশন দেওয়া যেতে পারে।

  • বমি বন্ধ হওয়ার ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত মাকে না খেয়ে থাকতে হবে।

সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিলে গর্ভস্থ শিশুর ওপর তেমন ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে না। তবে গর্ভাবস্থায় ওজন কমে গেলে শিশুর ওজন কম ও অপুষ্টি হতে পারে।

  • ডা. সায়মা আফরোজ, স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিশেষজ্ঞ, আলোক হাসপাতাল লিমিটেড, মিরপুর-১০, ঢাকা।