স্তন ক্যানসার সচেতনতা মাস অক্টোবর। উন্নত দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও নারীদের ক্যানসারের মধ্যে শীর্ষে আছে স্তন ক্যানসার।
স্ক্রিনিং বা পরীক্ষা–নিরীক্ষার মাধ্যমে প্রাথমিক অবস্থায় নির্ণয় করা গেলে চিকিৎসায় এ রোগ থেকে সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব। এমনকি লক্ষণ দেখা দেওয়ার পর সঠিক উপায়ে ডায়াগনোসিস হলে সুচিকিৎসার মাধ্যমে আরোগ্য হওয়া যায়।
আসুন জেনে নিই স্তন ক্যানসারের পরীক্ষা–নিরীক্ষা ও শনাক্তকরণ সম্পর্কে কিছু তথ্য।
স্ক্রিনিং মানে আপাতসুস্থ, কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা। স্তন ক্যানসারের ক্ষেত্রে স্ক্রিনিংয়ের নিয়ম হলো:
যাঁরা সাধারণ ঝুঁকিতে আছেন অর্থাৎ পারিবারিক ইতিহাস, জিনগত সমস্যা বা বুকে রেডিয়েশনের ইতিহাস নেই, তাঁরা ২৫ থেকে ৪০ বছর বয়সে নিচের পরীক্ষাগুলো করতে পারেন:
স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরীক্ষা করাবেন ১–৩ বছর পরপর।
স্তনে কোনো পরিবর্তন দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরীক্ষা করাবেন ১ বছর পরপর।
ম্যামোগ্রাম (স্তনের একধরনের এক্স–রে) করাবেন ১ বছর পরপর।
স্তনে কোনো পরিবর্তন দেখা দিলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।
স্তনে কোনো চাকা, চামড়া কোঁচকানো বা একদিকে আকার পরিবর্তন মনে হলে:
৩০–এর কম বয়সীরা চিকিৎসকের মাধ্যমে পরীক্ষা করাবেন। সন্দেহজনক মনে হলে আলট্রাসনোগ্রাম, প্রয়োজনে কোর নিডল বায়োপসি করতে হবে।
৩০–এর বেশি বয়সীরা ম্যামোগ্রাম করাবেন, প্রয়োজনে কোর নিডল বায়োপসি করতে হবে।
দুই পাশে হলে অন্য রোগ বা হরমোনজনিত সমস্যার অনুসন্ধান ও ক্যানসারের সম্ভাবনা যাচাই করতে হবে।
এক পাশে ও দীর্ঘদিনের ইতিহাস হলে আলট্রাসনোগ্রাম বা ম্যামোগ্রাম কিংবা এমআরআই করতে হবে। সন্দেহজনক হলে বায়োপসি করতে হবে।
ম্যামোগ্রাম, প্রয়োজনে আলট্রাসনোগ্রাম করতে হবে। সন্দেহজনক হলে কোর নিডল বায়োপসি অথবা চামড়া বা নিপলের বয়োপসি করতে হবে।
স্তনে ব্যথা হলে চিকিৎসকের মাধ্যমে পরীক্ষা করাবেন। সন্দেহজনক মনে হলে আনুষঙ্গিক পরীক্ষা করা হবে।
বগলে চাকা হলে (দুই দিকে বা এক দিকে যা-ই হোক) অন্য রোগ আছে কি না, পরীক্ষা করতে হবে। প্রয়োজনমতো ম্যামোগ্রাম, আলট্রাসনোগ্রাম বা এমআরআই ও সন্দেহজনক মনে হলে বায়োপসি করতে হবে।
যেকোনো ক্যানসারের ডায়াগনোসিস নিশ্চিত করা যেমন জরুরি, তেমনি এর পর্যায়, চিকিৎসার পন্থা ও আরোগ্য সম্ভাবনা জানার জন্য প্রয়োজনীয় সব পরীক্ষা করাও জরুরি।
পাশাপাশি কাঙ্ক্ষিত ফল লাভের জন্য সময়মতো ধাপে ধাপে সঠিক চিকিৎসাও গুরুত্বপূর্ণ।
ডা. আ ন ম মঈনুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, রেডিওথেরাপি বিভাগ, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ, বরিশাল