পথেঘাটে সুব্যবস্থা না থাকায় বাড়ির বাইরে প্রস্রাবের চাপ হলে অনেকেই অস্বস্তিতে পড়েন। বিশেষত নারীরা এ নিয়ে বেশি সংকোচে ভোগেন। প্রস্রাব চেপে রাখাটা কখনোই স্বাস্থ্যকর নয়। কোথায় প্রস্রাব করবেন, এই আশঙ্কায় অনেকেই আবার বাইরে গিয়ে প্রয়োজনের তুলনায় কম পানি বা তরল গ্রহণ করেন, সেটাও স্বাস্থ্যকর নয়। যেকোনো পরিস্থিতিতেই স্বাভাবিক মাত্রায় তরল গ্রহণ করতে হবে। তবে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশিবার যেন প্রস্রাবের বেগ না পায়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে পারেন। তাহলে বারবার অস্বস্তিতে পড়তে হবে না। বাইরে যাওয়ার আগে এবং বাইরে গিয়ে আমরা কী খাচ্ছি, তার ওপর বিষয়টি অনেকাংশেই নির্ভর করে।
ধরে নেওয়া যাক, আপনি এমন কোথাও আছেন, যেখানে প্রস্রাব করার ব্যবস্থাটা ঠিক আপনার মনের মতো নয় কিংবা আগামী ঘণ্টা তিনেকের মধ্যে আপনি এমন কোনো সফরে রওনা হচ্ছেন, যেখানে তেমন সুব্যবস্থা নেই। এই সময় তৃষ্ণা বোধ হলে পানি খাওয়াই আপনার জন্য ভালো। চা, কফি, কোমল পানীয় ও অ্যালকোহল গ্রহণ করলে বারবার প্রস্রাবের চাপ আসতে পারে। ফলের রস বা জুসে চিনি দেওয়া থাকলে সেটির কারণেও এমনটা হতে পারে। পানি পান করবেন যথেষ্ট, কিন্তু অতিরিক্ত নয়। খাবারের মধ্যে ডাল বা স্যুপজাতীয় কিছু থাকলে আপনার পানির চাহিদাও বেশ খানিকটা পূরণ করবে। তাই পানি খাওয়ার সময় সেটাও খেয়াল রাখুন।
এ ধরনের পরিস্থিতিতে কিছু খাবারও এড়িয়ে চলা ভালো। মিষ্টান্ন তো বটেই, টক ফল ও মসলাদার খাবারও না খাওয়াই শ্রেয়। টমেটোর সালাদ ছাড়াও টমেটো সস দেওয়া অনেক খাবার খাওয়া হয় হরহামেশাই। যেমন পিৎজা বা পাস্তা। এগুলোও এড়িয়ে চলা ভালো। আবার কাঁচা পেঁয়াজ দেওয়া খাবারও হয়ে উঠতে পারে সমস্যার কারণ। চকলেট ও প্রক্রিয়াজাত খাবারও বর্জনীয়। তবে চকলেট যদি খেতেই হয়, সাদা চকলেট নিন, যাতে ক্যাফেইন নেই।
খাবারদাবার ও পানীয়ের এই তালিকার সব কটি যে সবার জন্য ঘন ঘন প্রস্রাবের কারণ হবে, এমন নয়। অনেকের অতি উদ্বেগ বা অ্যাংজাইটি থেকেও এমন হয়। বাইরে যেতে হবে বা ভ্রমণ করতে হবে, এই চিন্তা করেই অনেকে উদ্বেগে ভোগেন। তাতে বেড়ানো বা ভ্রমণের আনন্দও নষ্ট হয়। তাই এ নিয়ে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করবেন না। বেরোনোর আগে অন্তত দুবার টয়লেটে গিয়ে মূত্রথলি খালি করুন।
শেষ কথা
ব্যক্তিভেদে এগুলোর প্রভাবে কিছুটা পার্থক্য দেখা দেয়, যা ব্যক্তি নিজেই পর্যবেক্ষণ করলে বুঝতে পারবেন। তবে এত কিছু খেয়াল রাখার পরও যদি পথেঘাটে প্রস্রাব লাগে, সংকোচ করবেন না। প্রস্রাব চেপে রাখলে সহজেই প্রস্রাবে সংক্রমণ হয়। লম্বা সময় প্রস্রাব ধরে রাখলে পরে প্রস্রাব আটকেও যেতে পারে। তা ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে লম্বা সময়ের জন্য প্রস্রাব ধরে রাখলে মূত্রথলির ধারণক্ষমতা কমে যেতে পারে। এমনকি একসময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যত্রতত্র প্রস্রাব হয়েও যেতে পারে।