খেজুরের রস জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি হচ্ছে
খেজুরের রস জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি হচ্ছে

খেজুরের গুড় খেলে কি নিপাহ সংক্রমণ হয়

ক্যালেন্ডারে শীত নামতে এখনো কয়েক দিন বাকি। তবে গ্রাম থেকে শহরে শীতের প্রকোপ ঠিকই টের পাওয়া যাচ্ছে। শীতকালে গ্রামগঞ্জে খেজুরের রস খাওয়ার ধুম পড়ে। খেজুরের রস দিয়ে তৈরি হয় নানা রকম পিঠা। খেজুরের গুড়ের চাহিদা বাড়ে দেশজুড়ে। কিন্তু কয়েক বছর ধরে খেজুরের রস থেকে নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আবারও শোনা যাচ্ছে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্তের খবর।

খেজুর গুড় খেলে নিপাহ ভাইরাসের শঙ্কা কম

কীভাবে এ ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করা যায়, এ নিয়ে অধ্যাপক এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, শীতকালে খেজুরগাছে রস সংগ্রহের যে হাঁড়ি ঝুলিয়ে রাখা হয়, রাতে তাতে বাদুড় মুখ দেয়। এতে বাদুড়ের লালা রসে মিশে যায়। অনেক সময় বাদুড়ের মলমূত্রও রসকে দূষিত করে। এই মলমূত্র বা লালা থেকেই ছড়ায় নিপাহ ভাইরাস। তাই শীতে খেজুরের কাঁচা রস পান করা যাবে না। তবে রস জ্বাল দিলে এর মধ্যে থাকা জীবাণু ধ্বংস হয়ে যায়। তাই জ্বাল দিয়ে, গুড় বা চিনি তৈরি করে খাওয়া যাবে। মনে রাখতে হবে, স্ফুটনাঙ্কের ওপর তাপমাত্রায় জ্বাল দিতে হবে বেশ কিছুক্ষণ। তারপর ঠান্ডা করে খেতে হবে। খেজুরের কাঁচা রসে ভেজানো পিঠাপুলি খাওয়া যাবে না।

কাঁচা খেজুরের রসে থাকতে পারে নিপাহ ভাইরাসের জীবানু

নিপাহ ভাইরাসে সংক্রমিত হলে মৃত্যু প্রায় অনিবার্য। এটি মস্তিষ্কে প্রদাহ বা এনকেফালাইটিস করে। তাই প্রতিরোধই সবচেয়ে ভালো উপায়। কেউ নিপাহ ভাইরাসে সংক্রমিত হলে তাকে যত্নকারী, চিকিৎসক ও নার্স—সবাইকে যথাযথ প্রতিরোধব্যবস্থা, যেমন মাস্ক ও পিপিই পরতে হবে, নাহলে তাঁরাও আক্রান্ত হতে পারেন এবং তাঁদের মাধ্যমে অন্যদের মধ্যে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে।

গাছে ঝুলে থাকা নানা রকম পাকা ফলেও বাদুড় মুখ দেয় ও কামড়ায়। তাই গাছ থেকে পেড়ে আধখাওয়া ফল কিছুতেই খাওয়া যাবে না। যেকোনো ফল পেড়ে ভালো করে ধুয়ে খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। শিশুদের এ বিষয়ে সচেতন করতে হবে। অনেক সময় গাছ থেকে পেড়ে বা নিচে পড়ে থাকা পেয়ারা, বরই, জামরুল ইত্যাদি শিশুরা হাতে নিয়ে খেতে শুরু করে। এভাবে খাওয়া যাবে না।