আর্থ্রাইটিস নানা ধরনের। বয়স্ক ব্যক্তিরা সবচেয়ে বেশি ভোগেন অস্টিওআর্থ্রাইটিসে। বিশ্বজুড়ে ৫২ কোটি মানুষ অস্টিওআর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত। ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে এ রোগে হাঁটু আক্রান্ত হয়। এ ছাড়া নিতম্ব বা হিপ জয়েন্টও আক্রান্ত হয়। পুরুষের তুলনায় নারীরা বেশি আক্রান্ত হন। অস্টিওআর্থ্রাইটিস চিকিৎসায় ফিজিওথেরাপি অত্যন্ত কার্যকর।
অস্টিওআর্থ্রাইটিস হলো সন্ধির ক্ষয়জনিত রোগ। নরম কার্টিলেজ বা তরুণাস্থি আমাদের বড় সন্ধিগুলো আবৃত করে রাখে। অস্টিওআর্থ্রাইটিসে সন্ধির এই কার্টিলেজের গাঠনিক বা কোলাজেন বিন্যাস বিশৃঙ্খল হয়। ফলে সন্ধি তার স্থিতিস্থাপকতা হারায় ও কার্টিলেজে ফাটল ধরে। পরবর্তী সময়ে সন্ধির কার্টিলেজ ও হাড়ের ক্ষয় হয় এবং এর আশপাশের কাঠামো আক্রান্ত হয়।
ওজন বেশি থাকলে।
আঘাত পেলে।
বংশগতভাবে এ সমস্যা থাকলে।
পায়ের শ্রেণিবিন্যাস বাঁকা হলে।
হাঁটুতে ব্যথা হয়, বিশেষ করে কাজকর্মে, হাঁটাচলায় ব্যথা বাড়ে।
হাঁটুর সন্ধি শক্ত হয়ে পুরোপুরি ভাঁজ করতে না পারা, সন্ধি ফুলে যাওয়া।
টানা অনেকক্ষণ বসে থাকলে ব্যথা বাড়তে পারে।
ভারী কোনো জিনিস বহন করলে ব্যথা করা বা ব্যথা বেড়ে যাওয়া।
সিঁড়ি ভাঙলে হাঁটুতে ব্যথা বেশি অনুভূত হওয়া ও ওপরে উঠতে কষ্ট হওয়া।
ব্যথানাশক ওষুধ, সঠিক জীবনাচরণ পদ্ধতি ও ফিজিওথেরাপি এ রোগের মূল চিকিৎসা।
চিকিৎসার মূল উদ্দেশ্য ব্যথা ও হাঁটুর ফোলা কমানো, হাঁটুর সন্ধির নরম কার্টিলেজ ও হাড়ের ক্ষয় রোধ করা।
হাড়ক্ষয়ের সমস্যা পুরোপুরি দূর হয় না, তবে এর বৃদ্ধি ঠেকিয়ে দেওয়া যায়।
রিউমাটোলজিস্ট ও ফিজিওথেরাপিস্টের সমন্বয়ে চিকিৎসা করাতে হবে।
ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যায়াম করলে মাংসপেশির দুর্বলতা দূর করা ও লিগামেন্টের স্থিতিশীলতা বাড়ানো সম্ভব হয়।
হাঁটুতে সহায়ক কোনো যন্ত্র দরকার হলে পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে।
রিউমাটোলজিস্টের পরামর্শে ব্যথানাশক জেল ব্যবহার বা ব্যথানাশক ওষুধ খেতে হবে। এতেও ব্যথার উপশম না হলে ইনজেকশন বা সার্জারি দরকার হতে পারে।
ব্যথা থাকার পরও শারীরিকভাবে কর্মক্ষম থাকা দরকার। প্রতিদিন হাঁটা, সাঁতার কাটা ভালো।
ওজন বেশি হলে কমাতে হবে, প্রয়োজনে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে হবে।
সাইফুল ইসলাম, ফিজিওথেরাপিস্ট, মে ফেয়ার ওয়েলনেস ক্লিনিক, ঢাকা