স্বাস্থ্যকর ওজন ধরে রাখে জটিল শর্করাযুক্ত খাবার, জেনে নিন এই খাবার কোনগুলো

জটিল শর্করা থেকে দেহে ধীরে ধীরে শক্তি নির্গত হয়
ছবি: সংগৃহীত

শর্করা দেহের শক্তির উৎস ও মস্তিষ্কের প্রধান জ্বালানি হিসেবে কাজ করে। সাম্প্রতিক কালে অনেকে খাদ্য থেকে সম্পূর্ণরূপে শর্করা বাদ দেয়। কিন্তু সব শর্করা খারাপ নয়। ভালো শর্করা হলো জটিল বা কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট।

জটিল শর্করা থেকে দেহে ধীরে ধীরে শক্তি নির্গত হয়। মোট ক্যালরির ৫০ থেকে ৫৫ শতাংশ শর্করা থেকে আসা উচিত। সুস্থতার জন্য প্রাপ্তবয়স্কদের দৈনিক ১৩০ গ্রাম শর্করা গ্রহণ করা দরকার। জটিল শর্করা ওজন হ্রাস করতে, স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে, কোলেস্টরল ও রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে।

জটিল শর্করাযুক্ত খাবার

আস্ত শস্যদানা: আস্ত শস্যদানা বা গোটা শস্য আঁশসমৃদ্ধ খাদ্য। এতে ব্রান ও এন্ডোস্পার্ম থাকে, যা গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে। যেমন লাল চাল, লাল আটা, ওটস, রাই, ভুট্টা ও বার্লি। পাশাপশি এগুলোতে আছে আয়রন, প্রোটিন, জিংক ও বি ভিটামিন।

আলু: আলুতে প্রচুর পরিমাণে স্টাচ পটাশিয়াম, ফাইবার, আয়রন, ভিটামিন সি ও বি৬ আছে। এক কাপ খোসাসমেত আলুতে ৩১ গ্রাম শর্করা থাকে। একটি মাঝারি আলুতে ১১০ ক্যালরি থাকে। এসব স্বাস্থ্যকর ক্যালরি। আলুতে চর্বি, সোডিয়াম বা কোলেস্টরল থাকে না। তবে অবশ্যই পরিমাণমতো খেতে হবে।

সাইট্রাস ফল: এর মধ্যে আছে আমলকী, আমড়া, জলপাই, লেবু, কমলালেবু প্রভৃতি ফল। এসব ফল উচ্চ পরিমাণে আঁশ, খনিজ ও ভিটামিনের উৎস।

বেরিজাতীয় ফল: স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, চেরি প্রভৃতি ফলে থাকে প্রো-অ্যান্থোসায়ানিন নামক প্রাকৃতিক অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, যা ক্যানসার ও রোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।

আপেল: একটি আপেলে ২৩ গ্রাম শর্করা ও প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট থাকে।

মিষ্টি আলু: এতে খুব কম সোডিয়াম, কোলেস্টেরল ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। এ ছাড়া এতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, বি৫ এবং ভিটামিন এ ও সি রয়েছে।

বাদাম ও লেগুম: বাদাম ও লেগুমে শর্করার পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে ওমেগা৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, খনিজ ও ভিটামিন ও আঁশ রয়েছে। তবে অবশ্যই এসব শারীরিক অবস্থাভেদে খেতে হবে। এ ছাড়া খেতে পারেন শিমের বিচি, মটরশুঁটি, মসুর ডাল, মুগ ডাল, ছোলা ইত্যাদি।

কলা: কলায় আঁশ, পটাশিয়াম, ভিটামিন বি৬ রয়েছে। একটি কলায় ২৪ গ্রাম শর্করা থাকে, যা থেকে ভালো পুষ্টি পাওয়া যায়। এ ছাড়া রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম ও ভিটামিন সি।

সবুজ শাকসবজি: এসবে ক্যালরি কম থাকে। উচ্চ মানের ভিটামিন মিনারেলসমৃদ্ধ হওয়ায় প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন। খেতে পারেন শসা, টমেটো, পুদিনা, ধনেপাতা, পালংশাক, ব্রকলি, লাউ, পেঁপে, ফুলকপি ইত্যাদি।

শুষ্ক ফল: খেজুর, কিশমিশ, এপ্রিকট, শুকনো পিচের মতো ফলগুলোতে স্বাস্থ্যকর শর্করার পাশাপাশি রয়েছে ভিটামিন, মিনারেলস ও
পর্যাপ্ত আঁশ।

তরমুজ: আধা কাপ তরমুজে ৫.৫ গ্রাম শর্করা থাকে, যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এ ছাড়া ভিটামিন এ, ভিটামিন সি রয়েছে, যা চোখের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে, চোখের ছানি প্রতিরোধ করে। কম ক্যালরিযুক্ত এ ফলে থাকে উচ্চ পরিমাণে পানি।

লিনা আকতার, পুষ্টিবিদ, রাইয়ান হেলথ কেয়ার হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার, দিনাজপুর