নির্দিষ্ট বয়সসীমায় একজন নারীর প্রতি মাসের একটি নির্দিষ্ট সময় মাসিক হওয়াটা স্বাভাবিক। কোনো কোনো মাসে মাসিক হতে খানিকটা দেরি হতে পারে। তবে একটি নির্দিষ্ট বয়সে পৌঁছনোর আগে এই চক্র একেবারে থেমে যাওয়াটা স্বাভাবিক নয়। এর পেছনে থাকে কোনো না কোনো রোগবালাই কিংবা অস্বাভাবিকতা।
কারণ
১. থাইরয়েডসহ অন্যান্য হরমোনের তারতম্যের কারণে মাসিক বন্ধ হতে পারে।
২. ওভারিতে সিস্ট হলেও মাসিক বন্ধ থাকতে পারে।
৩. পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম মাসিক বন্ধ থাকার অন্যতম প্রধান কারণ।
৪. অতিরিক্ত ওজন, অপুষ্টি, খুব অল্প পরিমাণ খাবার গ্রহণ, হঠাৎ অতিরিক্ত ওজন হ্রাস, প্রয়োজনের অতিরিক্ত ব্যায়াম, মানসিক চাপ কিংবা হতাশার কারণেও মাসিক বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
৫. কিছু ওষুধ সেবনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও মাসিক বন্ধ হয়ে যায়। জন্মনিয়ন্ত্রণের কিছু পদ্ধতি ব্যবহারের কারণেও মাসিক বন্ধ থাকতে পারে।
যেসব সমস্যা হতে পারে
মাসিক বন্ধ থাকলে আপাতদৃষ্টে সেটিকে কোনো সমস্যা না–ও মনে হতে পারে। তবে চিকিৎসা না করালে পরবর্তী সময়ে সন্তান ধারণে সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি থাকে। হাড়ের ঘনত্বও কমে যায়। ফলে হাড় ভঙ্গুর হয়ে যেতে পারে। তা ছাড়া যে কারণে মাসিক বন্ধ হয়ে গেছে, সেটির কারণে অন্য কিছু সমস্যাও দেখা যেতে পারে। এই যেমন মাথাব্যথা, চুল পড়া, মুখে অতিরিক্ত লোম বা ব্রণের মতো কিছু সমস্যা দেখা যেতে পারে। কারও কারও তলপেটে ব্যথা হতে পারে, কারও আবার স্তন থেকে দুধের মতো কিছু তরল নিঃসৃত হতে পারে। কেউ কেউ আবার দৃষ্টির সমস্যাতেও ভুগতে পারেন।
সমস্যা এড়াতে
স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করা আবশ্যক। ওজন রাখুন নিয়ন্ত্রণে। সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন। নিয়মিত শরীরচর্চা করুন। মানসিক চাপ সামলে পথ চলতে শিখুন। পরপর তিন মাস মাসিক না হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। জন্মনিয়ন্ত্রণপদ্ধতির কারণে এমন সমস্যা হচ্ছে কি না, সেটিও বিবেচ্য বিষয়।
কৈশোরের সমস্যা
পনেরো বছর বয়সের মধ্যে মাসিক শুরু না হলে সেটিকেও বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। দেহের অভ্যন্তরীণ গঠনগত কোনো সমস্যা কিংবা হরমোনের সমস্যার কারণে এমনটা হতে পারে। প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় পৌঁছে এসব কারণে এই কিশোরীরা যাতে কোনো শারীরিক বা মানসিক সমস্যায় না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে যথাসময়ে চিকিৎসা নেওয়া জরুরি।
সূত্র: হেলথলাইন, মায়ো ক্লিনিক
Photo by pexels by Sora Shimazaki