গর্ভাবস্থায় ছত্রাক সংক্রমণ হলে কী করবেন

গর্ভাবস্থায় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণে প্রায়ই নানা ধরনের ছত্রাক বা ফাঙ্গাসের সংক্রমণ দেখা দেয়। এ সময় এমন সংক্রমণের চিকিৎসা বিশেষ সতর্কতার সঙ্গে করতে হবে, যাতে মা ও শিশু উভয়ে নিরাপদ থাকে। এখানে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হলো, যা গর্ভাবস্থায় ছত্রাক সংক্রমণের চিকিৎসায় সহায়ক হতে পারে:

চিকিৎসকের পরামর্শ নিন

যেকোনো ওষুধ বা চিকিৎসা শুরু করার আগে অবশ্যই একজন চিকিৎসক বা চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। কারণ, ছত্রাকরোধী ওষুধ এমনকি মলমও গর্ভাবস্থায় নিরাপদ না-ও হতে পারে।

টপিক্যাল অ্যান্টিফাঙ্গাল ক্রিমগুলো গর্ভাবস্থায় ছত্রাক সংক্রমণের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ ও কার্যকর।

টপিক্যাল অ্যান্টিফাঙ্গাল ক্রিম

টপিক্যাল অ্যান্টিফাঙ্গাল অর্থাৎ ফাঙ্গাস প্রতিরোধে মলম/ক্রিম গর্ভাবস্থায় সাধারণত বেশি নিরাপদ। কারণ, এটি শুধু সংক্রমিত স্থানে ব্যবহার করা হয় এবং রক্তে খুব কম শোষিত হয়। অ্যান্টিফাঙ্গাল হিসেবে মুখে খাওয়ার টারবিনাফিন ওষুধ নিরাপদ। এ ছাড়া সব ওষুধ এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ, এতে গর্ভাবস্থায় ঝুঁকি থাকতে পারে।

যোনিতে ছত্রাক সংক্রমণের চিকিৎসা

গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তনের কারণে যোনিতে ছত্রাক সংক্রমণ সাধারণ সমস্যা। এ জন্য অ্যান্টিফাঙ্গাল ক্রিম বা সাপোজিটরি, যেমন: ক্লোট্রিমাজল ব্যবহার করা যেতে পারে।

সঠিক পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা

আক্রান্ত স্থান শুকনো ও পরিষ্কার রাখুন। কারণ, ছত্রাক আর্দ্র পরিবেশে বেশি বৃদ্ধি পায়। ঢিলেঢালা ও সুতি কাপড় পরিধান করুন, যাতে শরীরে ঘাম কম হয়।

প্রোবায়োটিক ও ডায়েট সমর্থন

প্রোবায়োটিক ও জীবন্ত ব্যাকটেরিয়াযুক্ত দই খাওয়া সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে। চিনি কম খান। কারণ, চিনি ছত্রাকের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে পারে।

নিরাপদ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার

সংক্রমণ স্থানের আশপাশে যদি শুষ্কতা ও চুলকানি থাকে, তবে একটি মৃদু, সুগন্ধহীন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে।

মনে রাখতে হবে, টপিক্যাল অ্যান্টিফাঙ্গাল ক্রিমগুলো গর্ভাবস্থায় ছত্রাক সংক্রমণের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ ও কার্যকর। যেকোনো চিকিৎসা শুরু করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, যাতে মা ও শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত হয়।

  • ডা. সিনথিয়া আলম: কনসালট্যান্ট, ক্লিনিক্যাল অ্যান্ড অ্যাসথেটিক ডার্মাটোলজি বিভাগ, ইউনাইটেড হাসপাতাল, ঢাকা