কোনো কাজ করতে গেছেন, হঠাৎ মনে হলো আঙুল আটকে (লক) গেছে। কিছুতেই আর খুলতে পারছেন না। একে বলা হয় ট্রিগার ফিঙ্গার। আঙুলের এই লক হয়ে যাওয়া কোনো আর্থ্রাইটিস বা বাত নয়। এটি হলে হাতে ব্যথা হয় এবং হাতের আঙুল ভাঁজ অবস্থান থেকে আর সহজে সোজা করা যায় না।
আমাদের হাতের ঐচ্ছিক মাংসপেশি লম্বা রগ বা টেন্ডনের মাধ্যমে হাড়ের সঙ্গে লাগানো থাকে। রগকে বেষ্টিত করে রাখা আবরণটি ফুলে গিয়ে যদি নডিউল বা ক্ষুদ্র পিণ্ডের মতো হয়, তখন আঙুলের মুঠি খুলতে গেলে লক হয়ে যায় এবং বাধাগ্রস্ত হয়। ৪০ থেকে ৬০ বছর বয়সে এ সমস্যা যে কারও হতে পারে। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে ঝুঁকি বেশি। যেমন যাঁদের আঙুলের কাজ বেশি করতে হয় (বাগান করা, মেশিন বা টুলস ব্যবহার, বাদ্যযন্ত্র বাজানো, টেনিস খেলা), কিছু অসুস্থতার কারণে (ডায়াবেটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, গেঁটে বাত, অস্টিওআর্থ্রাইটিস, থাইরয়েডের কোনো সমস্যা)। ডায়াবেটিক রোগীদের মধ্যে এটা বেশ পরিচিত সমস্যা।
ট্রিগার ফিঙ্গার যেন না হয়, তার জন্য কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।
একনাগাড়ে হাতের আঙুলের অতিরিক্ত ব্যবহার না করে মাঝেমধ্যে বিরতি দিতে হবে। হাতের কিছু ব্যায়াম করা যেতে পারে।
যদি হঠাৎ ব্যথা, আঙুল নাড়াতে গিয়ে জড়তা দেখা দেয়, তাহলে কালক্ষেপণ না করে ডাক্তারের কাছে যান। চিকিৎসায় হাতের বিশ্রাম নিতে বলা হয়। আঙুলকে বিশ্রাম দিতে স্প্লিন্ট ব্যবহার করতে বলা হয়। প্রয়োজনে ব্যথার ওষুধ, স্টেরয়েড ট্যাবলেট বা ইনজেকশন ব্যবহৃত হয়। তারপরও যদি নিরাময় না হয়, তাহলে অ্যানেসথেসিয়ার মাধ্যমে ছোট অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচারের পর কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাসের মধ্যে ট্রিগার ফিঙ্গারের ব্যথা ও অন্যান্য সমস্যা ঠিক হয়ে যায়।
লেখক: অ্যাসোসিয়েট কনসালট্যান্ট, মেডিসিন বিভাগ, স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড, ঢাকা