তারুণ্য মানেই যেন যা ইচ্ছা তা–ই। কলেজজীবন শেষ করে যত দিন গড়ায়, ততই অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে জীবনযাপন। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সদ্য চাকরিতে প্রবেশ করা তরুণদের জন্য ‘রুটিন’ শব্দটা অমাবস্যার চাঁদই বটে। অথচ একটু নিয়ম মেনে চললেই তরুণ্যের জীবনটাও ইতিবাচকভাবে বদলে যেতে পারে।
মনের ওপর চাপ কমায়
সকাল থেকে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত প্রতিটি মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কী করব, কীভাবে করব, কখন করব—প্রতিটি সিদ্ধান্ত নিতে বেশ বড় ধরনের চিন্তাভাবনার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগা যে–কারও জন্য এসব ছোট সিদ্ধান্ত গ্রহণের বাজে প্রভাব পড়ে তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর। শুরু থেকেই একটি রুটিন করা থাকলে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর চাপ পড়ে না।
অসুস্থতার প্রবণতা কমে
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্রের ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা যায়, যাঁরা নিয়মিত রুটিন মেনে চলেন, নিয়মমাফিক ঘুম থেকে ওঠেন, নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যান, নিয়মিত শরীরচর্চা করেন, তাঁদের অসুস্থ হওয়ার পরিমাণ রুটিন মেনে না–চলা যে–কারও থেকে ৬০ শতাংশ কম। রুটিনের ভেতরে থেকে অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন করা অসম্ভবই বটে। কাজেই স্বাভাবিকভাবেই শরীরে নিয়ন্ত্রণ চলে আসে এবং শরীরও সেই রুটিনের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেয়। তাই অসুস্থতার পরিমাণ অনেকাংশেই কমে আসে।
দুশ্চিন্তা কমে
বেশির ভাগ মানুষই দুশ্চিন্তা শুরু করেন ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবনা থেকে। সেখানে দিনের শুরুতেই যদি প্রতিদিনের কাজ সম্পর্কে একটি ধারণা থাকে, প্রতিদিন নিয়মমাফিক চলাচল করা যায়, তবে ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা অনেকাংশেই কমে আসে।
রুটিনে ভেতরে থেকে বেশি কাজ করা যায়
প্রতিদিনের রুটিন তৈরি করার সময় প্রতিটি কাজের জন্যই আলাদা সময় ভাগ করা থাকে। তাই সেই রুটিন ঠিকঠাক মেনে চললে প্রতিদিনই কিছু না কিছু কাজ করা হয়ে থাকে। নির্দিষ্ট রুটিন না থাকলে দেখা যায়, কোনোদিন হয়তো অনেক কাজ করা হয়েছে, কোনোদিন আবার অলসেমিতে কাজই করা হয়নি। তাই ‘প্রোডাক্টিভিটি’র বেশ হেরফের হয়।
ভালো ঘুম
প্রতিদিন একই রুটিন মেনে চলা সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে ঘুমের ওপর। তরুণ বয়সে কাজের চাপে অনেকেই সময়মতো ঘুমোতে পারেন না। নিদ্রাহীনতায় ভোগা যে–কারও জন্য রুটিন মেনে চলা সবচেয়ে উপকারী পরামর্শ। এতে করে প্রতিদিন একই সময় ঘুমাতে যাওয়া, গভীর ঘুম ও ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস তৈরি হয়।
তথ্যসূত্র: গেটক্লকওয়াইজ