ঈদের ছুটিতে পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়ি যান একটা বড়সংখ্যক মানুষ। দীর্ঘ ছুটি পাওয়ার কারণে অনেকে এদিক-ওদিক ঘুরতেও যান। যেখানেই যান, স্বাস্থ্য সুরক্ষার কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চলুন এই সময়।
বর্ষা, বন্যা, পানি
সাঁতার জানলেও বর্ষার ভরা জলাধারে বিপদের আশঙ্কা থাকে। ঝুঁকি নেবেন না। আশপাশে কেউ না থাকলে পানিতে নামবেন না। কখনোই গভীরে যাবেন না। জোঁকের ভয় থাকলে এমন পোশাক পরে পানিতে নামা উচিত, যেন জোঁক ঢুকতে না পারে। যেমন-আঁটসাঁট সুইমিং স্যুট। পুকুর-নদীর কাছে শিশুদের একা ছাড়বেন না। শহুরে পরিবেশে বেড়ে ওঠা শিশুরা অতি উৎসাহী হয়ে ছোটাছুটি করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়তে পারে। সমুদ্রসৈকতে জোয়ার-ভাটার সময় মেনে চলুন। চোরাবালি ও বিপজ্জনক এলাকা এড়িয়ে চলুন।
ঝিরিপথে, ঝোপঝাড়ে
ঝোপঝাড়ে সাপ, অন্যান্য প্রাণী বা পোকামাকড় থাকতে পারে। তাই সাবধানে চলা উচিত। অনেকে বানর, কুকুর ও অন্য প্রাণীদের উত্ত্যক্ত করে। এরা তখন খেপে গিয়ে কামড়ে দেয়। এমনটা যেন না হয়।
মৌচাক থাকলে ভ্রমণদলের কারণে যেন মৌমাছিদের অসুবিধা না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
ঝরনা দেখতে ঝিরিপথ ধরে হেঁটে চলে অভিযাত্রিক দল। ঝিরিপথ, চা-বাগান বা কাদামাখা পথেও জোঁকের ভয় থাকে। লবণ, শ্যাম্পু, ইত্যাদি দিয়ে জোঁক ছাড়ালে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। তাই সাবধানে জোঁক ছাড়িয়ে ক্ষতটা পরিষ্কার করতে হবে। রক্তপাত হলে দ্রুত বন্ধ করতে হবে। ক্ষতস্থান চেপে ধরলে এবং ক্ষতস্থানকে হৃৎপিণ্ড থেকে উঁচু অবস্থানে ধরলে দ্রুত রক্তপাত বন্ধ হয়।
পাহাড়ি পিচ্ছিল পথে চলাচলে সতর্কতা অবলম্বন করুন।
আগুনের উৎস
অনেক বাড়িতে এখনো মাটির চুলায় রান্না হয়। আবার অনেকে ঘুরতে গিয়ে ক্যাম্পফায়ার বা বারবিকিউ পার্টির আয়োজন করেন। এসব বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করুন। লোকালয়ে বা অরণ্যে ফানুস না ওড়ানোই ভালো।
খাবার আগে
খাবার আগে হাত ধোয়া সম্ভব না হলে স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন। যা পান করছেন, তা নিরাপদ পানি দিয়ে তৈরি কি না, খেয়াল রাখুন। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে তৈরি খাবার এড়িয়ে চলুন।
আরও কিছু
ভ্রমণে স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক বাথরুমের অভাবে অনেকে প্রস্রাব চেপে রাখেন। বিশেষত নারীদের মধ্যে এ প্রবণতা বেশি দেখা যায়। এমনটা করা যাবে না। এতে প্রস্রাবে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
কেবল শৌচকর্মের পরই নয়, ভ্রমণে গিয়ে শৌচকর্মের আগেও হাত ধোয়া উচিত বা নিদেনপক্ষে হাতে স্যানিটাইজার ব্যবহার করা উচিত।
মশা-মাছি থেকে সাবধান
মশারি ব্যবহার করুন অবশ্যই। ফুলহাতা জামা ও ফুলপ্যান্ট বা পায়জামা পরা ভালো। তিন বছরের বেশি বয়সী সবাই মস্কিউটো রিপেল্যান্ট ব্যবহার করতে পারেন। তবে শিশুদের হাতে, মুখে রিপেল্যান্ট দেবেন না। খেয়াল রাখুন, খাবারে যেন মাছি না বসে।
লেখক: ক্লিনিক্যাল স্টাফ, নিউরোমেডিসিন বিভাগ, স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড, পান্থপথ, ঢাকা