লবণে রয়েছে ৪০ শতাংশ সোডিয়াম ও ৬০ শতাংশ ক্লোরাইড। অনেকগুলো শারীরবৃত্তীয় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য লবণ তথা সোডিয়ামের প্রয়োজন রয়েছে। একেবারে কম পরিমাণ লবণ গ্রহণ করা ক্ষতিকর, আবার বেশি লবণ গ্রহণ শরীরের জন্য বিপজ্জনক।
অতিরিক্ত লবণ গ্রহণে রক্তচাপ বাড়ে। খাদ্যে লবণের আধিক্য হলে রক্তের জলীয় অংশ বেড়ে যায়। কিডনি তখন অতিরিক্ত পানিনিষ্কাশনে ব্যর্থ হয়। এগুলো রক্তনালিতে রয়ে যায় বলে রক্তচাপ বাড়ে।
অনেকের পায়ে পানি জমতে পারে।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধও অনেক সময় অকার্যকর হয়ে পড়ে।
মধ্যবয়স্ক, বৃদ্ধ, স্থূলকায় মানুষের ওপর লবণের নেতিবাচক প্রভাব বেশি।
পাকস্থলীর ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে।
লবণসমৃদ্ধ মাংস ও আচারজাতীয় খাবারে লবণের আধিক্য থাকে। লবণসমৃদ্ধ খাদ্যের কারণে পাকস্থলীতে হেলিকো ব্যাকটর পাইলোরি নামক ব্যাকটেরিয়ার অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়। এই জীবাণু পাকস্থলীতে আলসার সৃষ্টি করে এবং কালক্রমে এটি ক্যানসারে রূপ নিতে পারে।
প্রেশার কমে যায়। নিম্ন রক্তচাপ ও শরীরের জন্য তা ক্ষতিকর।
রক্তে সোডিয়ামের পরিমাণ কমে গেলে এটিকে বলা হয় হাইপোনেট্রিমিয়া। এমনটি হলে মাথাব্যথা, মাথাঘোরা, বমি বমি ভাব, ঝাপসা দৃষ্টি, হতাশা, পানিশূন্যতা, মানসিক ভারসাম্যহীনতা, অসংলগ্ন কথাবার্তা ইত্যাদি লক্ষণ প্রকাশ পায়।
লবণের তীব্র ঘাটতির কারণে খিঁচুনি, মূর্ছা যাওয়া, এমনকি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটতে পারে।
রক্তের এলডিএল কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইড নামের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, যদি হৃদ্রোগ প্রতিরোধ করতে হয়, তবে দৈনিক ৫ গ্রামের কম লবণ গ্রহণ করতে হবে। ৫ গ্রাম লবণে সোডিয়ামের পরিমাণ ২ গ্রাম। ডায়াবেটিস কিংবা কিডনির রোগ থাকলেও এই মাত্রায় লবণ গ্রহণ করতে হবে।
যাঁদের এসব ব্যাধি নেই, তাঁরা ২,৫০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত সোডিয়াম গ্রহণ করতে পারেন। এক টেবিল চামচ লবণে ২,৪০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম থাকে। তাই যাঁরা ব্যাধিমুক্ত, তাঁদের সারা দিন সব ধরনের খাবার মিলিয়ে এক টেবিল চামচের অনেক কম লবণ খেতে হবে।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল ডা. নাসির উদ্দিন আহমদ, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, সিএমএইচ, ঢাকা