মেডিটেশনের উপকারিতা সবারই জানা। এতে বাড়ে মনোযোগ, মনে রাখার ক্ষমতা ও নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ। কমে উদ্বেগ, হতাশা ও মানসিক চাপ। বর্তমান সময়ে তাই এটা আরও বেশি দরকারি। কিন্তু মুশকিল হলো আধুনিক জীবন এত ব্যস্ত, নিজের জন্য কিছু করার ফুরসতই মেলে না। তার ওপর মেডিটেশনের জন্য মস্তিষ্ককে আলাদাভাবে প্রশিক্ষিত করতে হয়। সেটাও সবার পক্ষে সম্ভব হয় না। তাই মেডিটেশনের বদলি হিসেবে এই পাঁচটি কাজ করতে পারেন।
হাঁটার সময় পায়ের চলার পথ ছাড়া আর তেমন কিছু নিয়ে ভাবতে হয় না। তাই মস্তিষ্ক আরাম পায়। আপনিও কিছু সময় মনের খুশিমতো ভাবতে পারেন। ভাবনাটা কোনো কিছুতে নিবিষ্ট করলেই মেডিটেশনের কাজ হবে। সঙ্গে উপরি পাওনা, পায়ের সঙ্গে মাটির সংযোগ। এটাও আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের পক্ষে সহায়ক। তাই পাতলা স্যান্ডেল বা খালি পায়ে হাঁটতে পারেন।
আপনি যখনই কোনো নৈসর্গিক পরিবেশে যাবেন, খেয়াল করবেন সেখানকার সৌন্দর্য আপনাকে অন্যমনস্ক করে দেবে। এমনিতে আপনি যখন কিছু দেখেন, আপনার চোখ কোনো একটা বিষয়ে নিবিষ্ট থাকে। কিন্তু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে চোখ সবকিছু মিলিয়ে দেখতে চায়। অনেকটা প্যানারোমিক ভিউতে। সেটা আপনার স্নায়ুয়ুগুলোকে আরাম দেয়।
আপনার পছন্দ ও রুচিমাফিক কোনো একটি সৃজনশীল কাজ বেছে নিন। হতে পারে সেটা ছবি আঁকা, লেখালেখি, গান করা বা সিনেমা দেখা। এমনকি মৃৎশিল্প, কাঠখোদাইশিল্প ইত্যাদির কাজও করতে পারেন। এগুলো অনেকটাই মেডিটেশনের মতো। মস্তিষ্কের সব মনোযোগ কাজে নিবিষ্ট করতে হয়। আপনার হাত-চোখ সবই তাতে ব্যস্ত থাকে। একভাবে কাজ করতে হয় দীর্ঘক্ষণ।
কাপড় ধোয়া, ঘর মোছা, থালাবাসন মাজার মতো কাজগুলো কোনোমতে শেষ করতে পারলেই যেন বাঁচি আমরা। প্রায় বাড়িতেই এসবের জন্য কাজের লোক থাকে। অথচ মন দিয়ে করলে এগুলোকেও মেডিটেশনের কাছাকাছি নেওয়া সম্ভব। তাড়াহুড়া না করে সময় নিয়ে করুন। প্রতিটি খুঁটিনাটিতে নজর দিন। মনকে কাজে ডুবিয়ে দিন। সময় খুব একটা বেশি লাগবে না। কিন্তু মন প্রফুল্ল হবে।
বেশির ভাগ মানুষই মেডিটেশনের সময় জোর দেন সব চিন্তা দূরে রাখতে। তাতে উল্টো রাজ্যের সব চিন্তা তেড়ে আসে। তার চেয়ে ভালো উপায় হলো কোনো একটা বিষয় বা বস্তুতে মনস্থির করা। সে জন্য কাজে লাগাতে পারেন আপনার ঘরের জানালাটাকে। বাইরে তাকিয়ে কিছু একটা বেছে নিন। ট্রাফিক লাইট, কোনো বিলবোর্ড, কোনো গাছ বা যেকোনো কিছু। তাতে সব মনোযোগ স্থির করুন। সহজেই দূর হবে মনের ক্লান্তি।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান