বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে অতি পরিচিত মুখ নাফিস ইকবাল আক্রান্ত হয়েছেন বিরল রোগ সেরিব্রাল ভেনাস সাইনাস থ্রম্বোসিসে
বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে অতি পরিচিত মুখ নাফিস ইকবাল আক্রান্ত হয়েছেন বিরল রোগ সেরিব্রাল ভেনাস সাইনাস থ্রম্বোসিসে

নাফিস ইকবালের বিরল রোগ সেরিব্রাল ভেনাস সাইনাস থ্রম্বোসিস, কেন হয়, সমাধান কী

বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে অতি পরিচিত মুখ নাফিস ইকবাল। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে খেলেছেন বেশ কয় বছর। এখন তিনি দলের লজিস্টিক ম্যানেজার। সম্প্রতি ঘুরে এলেন যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে। গত শুক্রবার জানা গেল, ৩৯ বছর বয়সী নাফিস স্ট্রোক হয়েছে। অনেকেই অবাক হয়েছেন, এত অল্প বয়সে একজন সাবেক খেলোয়াড়ের স্ট্রোক হলো কেন? অবশেষে তাঁর চিকিৎসক জানালেন, স্ট্রোকের ধরন সেরিব্রাল ভেনাস সাইনাস থ্রম্বোসিস, যা খুবই বিরল একটি রোগ। আসুন, জেনে নিই এই রোগ সম্পর্কে।

সেরিব্রাল ভেনাস সাইনাস থ্রম্বোসিস মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ বা স্ট্রোকের একটি ধরন, যা খুবই বিরল। এক লাখ মানুষের মধ্যে মাত্র আড়াইজনের এ রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এর মধ্যে নারীরা থাকেন বেশি ঝুঁকিতে, বিশেষ করে যাঁরা জন্মনিরোধক বড়ি খাচ্ছেন এবং যাঁরা অন্তঃসত্ত্বা অথবা অন্তঃসত্ত্বা–পরবর্তী সময় অতিবাহিত করছেন।

উপসর্গ কী

  • ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে রোগী মাথাব্যথা নিয়ে আসেন, যা হঠাৎ শুরু হয় এবং তীব্র হয়। এর সঙ্গে অনেকের বমি হয়।

  • পুরো শরীরে অথবা শরীরের একটি অংশে খিঁচুনি হতে পারে।

  • চোখে ঝাপসা দেখেন।

  • শরীরের এক পাশ অথবা দুই পাশই অবশ হয়ে যায়।

কাদের বেশি হয়

আগেই বলেছি, নারীদের বেশি হয়; সাধারণত ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সের মধ্যে। এ ছাড়া ক্যানসারে আক্রান্ত ব্যক্তি, বিশেষ করে রক্তের ক্যানসারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ঝুঁকি থাকে। সংক্রমণ, কোভিড অথবা কোভিডের টিকাও এর কারণ। স্থূলতা, কেমোথেরাপি, কিছু জিনগত কারণ, যেমন প্রোটিন সি, প্রোটিন এস ডেফিসিয়েন্সি, ফ্যাক্টর–ভি লেইডেন দায়ী।

রোগ নির্ণয়

এখন আধুনিক প্রযুক্তিতে এমআরআই এবং এমআরভি করে সহজে এই রোগ নির্ণয় করা যায়।

করণীয় কী

সেরিব্রাল ভেনাস সাইনাস থ্রম্বোসিস বিরল হলেও প্রাণসংহারী নয়। আর যেহেতু এমআরআই করে সহজে রোগ নির্ণয় করা যায়, তাই উপসর্গ দেখা দিলেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। হঠাৎ তীব্র মাথাব্যথা এবং এর সঙ্গে ফোকাল নিউরোলজিক লক্ষণ, যেমন বমি, খিঁচুনি, চোখে ঝাপসা দেখা অথবা শরীরের এক পাশ অবশ হয়ে যাওয়া—এমন কিছু দেখলে অবহেলা না করে নিকটস্থ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ডা. আফলাতুন আকতার জাহান: মেডিসিন স্পেশালিস্ট, স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড, ঢাকা