আমাদের শরীরের মাংসপেশির সংকোচন-প্রসারণ, হাঁটাচলা, লেখালেখি, কথা বলা ও খাবার খাওয়া—সবই নিয়ন্ত্রণ করে মোটর নিউরন। এটি ঠিকভাবে কাজ না করলে মাংসপেশি শুকিয়ে যায়, হাত-পায়ের শক্তি কমে যায় এবং ক্রমে কথা বলা ও খাবার খাওয়াও কঠিন হয়ে যায়। এ রোগকে ‘মোটর নিউরন ডিজিজ’ বা এমএনডি বলে। এমএনডিতে হাত–পায়ের অনুভূতির কোনো সমস্যা হয় না; কিন্তু পেশির শক্তি কমে যায়। সাধারণত বয়স্ক মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হন।
কারণ
মোটর নিউরন ডিজিজের কারণ অজানা। কিছু ক্ষেত্রে কিছু পরিবারে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা গেলেও এর সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি।
লক্ষণ
হাত–পায়ের মাংস শুকিয়ে যাওয়া।
মাংসপেশির অনিয়ন্ত্রিত কম্পন।
হাত–পায়ের শক্তি কমে যাওয়া।
কথা বলতে সমস্যা হওয়া।
খাবার খেতে (ঢোক গিলতে) সমস্যা।
খাদ্য শ্বাসনালিতে গিয়ে হতে পারে শ্বাসকষ্টও।
রোগনির্ণয়
মোটর নিউরন ডিজিজ নির্ণয় করতে রোগীর ইতিহাস ভালো করে শুনতে হবে এবং অনেক সময় নিয়ে শারীরিক পরীক্ষা করতে হবে। এ রোগে রোগীর হাত–পায়ের ঝিঁ ঝিঁ বা অনুভূতির কোনো সমস্যা হয় না, প্রস্রাব-পায়খানার নিয়ন্ত্রণও ঠিক থাকে। নার্ভ কন্ডাকশন স্টাডি (এনসিভি) ও ইলেকট্রোমায়োগ্রাফি (ইএমজি) পরীক্ষার মাধ্যমে এমএনডি রোগ নির্ণয় করতে হয়।
চিকিৎসা
চিকিৎসায় এমএনডি পুরোপুরি ভালো হয় না। তবে ‘রাইলুজল’ নামের একটি ওষুধ এ রোগের অগ্রসর হওয়ার গতি ধীর করে দেয়।
খাবার খেতে সমস্যা হলে নাকে নল দেওয়া যেতে পারে।
ফিজিওথেরাপি রোগীকে সাময়িকভাবে ভালো রাখে।
শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে অপেক্ষা না করে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে।
ডা. নাজমুল হক মুন্না, সহকারী অধ্যাপক (নিউরোলজি), ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েনস অ্যান্ড হাসপাতাল, ঢাকা