পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের প্রায় ৬ শতাংশ সপ্তাহে দুবার বিছানা ভেজায়। ১০ বছর বয়সীদের প্রায় ১ দশমিক ৫ শতাংশ রাতে বিছানায় প্রস্রাব করে। অথচ এ বয়স থেকে শিশুর প্রস্রাবের বেগ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা থাকা উচিত। মেয়েশিশুদের তুলনায় ছেলেশিশুদের মধ্যে এ সমস্যা বেশি দেখা যায়। বিছানা ভেজানো অসুখে ভোগা বেশির ভাগ শিশু দেহ-মনে সুস্থ থাকে। শিশুর বিছানা ভেজানো অসুখে ভোগার প্রধান কারণগুলো হলো—
ইউটিআই বা মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ।
কোষ্ঠকাঠিন্য।
ডায়াবেটিস মেলিটাস বা কিডনির দীর্ঘমেয়াদি অসুখ।
অতিসংবেদনশীল মূত্রথলি।
মূত্রতন্ত্র বা স্নায়ুতন্ত্রের জন্মগত ত্রুটিবিচ্যুতি।
চার বছর বয়সের পর প্রতিবছর প্রায় ৫ শতাংশ শিশু আপনা-আপনি এ রোগ থেকে নিষ্কৃতি পায়। বিছানা ভেজানোর সমস্যায় পড়া শিশুদের মধ্যে কেবল যাদের বয়স পাঁচ বছরের বেশি এবং যারা সপ্তাহে কমপক্ষে দুবার রাতে বিছানায় প্রস্রাব করে, তাদের জন্য চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার দরকার হয়।
বিছানা ভেজানো অসুখে পড়া শিশুকে পুরো বিষয় বুঝিয়ে বলতে হবে এবং মা-বাবাকে আশ্বস্ত করতে হবে যে শিশু বয়সের এটি একটি সাধারণ ও সচরাচর সমস্যা।
শিশুকে যেন দোষারোপ করা না হয়। শিশু যেন ঘুমাতে যাওয়ার দুই ঘণ্টা আগে পানীয় পান থেকে বিরত থাকে। আবার ঘুমাতে যাওয়ার আগে যেন পুরোপুরি মূত্রথলি খালি করার মতো প্রস্রাব করে বিছানায় ওঠে।
স্টার চার্ট: শিশু সপ্তাহে যে কয় দিন বিছানা ভেজাবে না, ক্যালেন্ডারে সেই দিনগুলো স্টার বা তারকা চিহ্নিত করে রাখা ও তাকে সে জন্য প্রশংসা করা বা পুরস্কৃত করা। এতে প্রস্রাব নিয়ন্ত্রণে শিশু আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে।
অ্যালার্ম: এটি হলো সেন্সরযুক্ত একটি অ্যালার্ম, যা শিশুর প্যান্টের সঙ্গে লাগানো থাকে। যখনই শিশু বিছানা ভেজাবে, তখনই অ্যালার্ম বেজে উঠবে এবং শিশু টয়লেটে গিয়ে প্রস্রাব করে আবার বিছানায় ঘুমাতে যাবে।
অ্যালার্ম বা অন্যান্য ব্যবস্থাপনা ব্যর্থ হলে শিশুবিশেষজ্ঞের পরামর্শমতো ডেসমোপ্রেসিন নামক ওষুধের চিকিৎসা দেওয়া হয় তিন থেকে ছয় মাসের জন্য।
অধ্যাপক ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী, সাবেক বিভাগীয় প্রধান, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল