শারীরিক বা মানসিক কোনো সমস্যা যদি আপনার থাকে, তাহলে যত পরিপাটিই থাকুন না কেন, আপনাকে খুব একটা সুন্দর দেখাবে না। অথচ যাঁর অন্তরে আছে প্রশান্তি, শরীরে নেই কোনো ব্যাধি, তিনি কিন্তু তেমন কোনো সাজগোজ না করে সাদামাটা চেহারাতেও সুন্দর। শরীরচর্চার নানা দিক এমনভাবে সৌন্দর্যের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা যে একে বাদ দিয়ে সৌন্দর্যচর্চাই অসম্পূর্ণ, এমনটাই জানালেন স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী কনসালট্যান্ট তাসনোভা মাহিন।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক অসুস্থতার ঝুঁকি বাড়ে। সবারই তাই শরীরচর্চার প্রতি মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। নিয়মমাফিক শরীরচর্চায় হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস, পরিপাকতন্ত্র, রক্তনালি, পেশি ও হাড় সুস্থ থাকে। শরীর সচল থাকলে খাবার থেকে পুষ্টি উপাদানগুলো ভালোভাবে পরিশোষিত হয়। কমে পুষ্টিহীনতা এবং রক্তশূন্যতার ঝুঁকি, কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রবণতা। বয়সজনিত ব্যথাবেদনাও কমে আসে। আর সুস্থ–সবল দেহেই প্রস্ফুটিত হয় সৌন্দর্য।
ত্বকের ওপর প্রভাব
শরীরচর্চায় বাড়ে রক্তপ্রবাহ। শরীরের অন্যান্য অংশে তো বটেই, ত্বকেও রক্ত সঞ্চালিত হয় ঠিকঠাক। ফলে ত্বক থাকে সুস্থ ও সতেজ। বজায় থাকে ত্বকের স্বাভাবিক আভা। তা ছাড়া শরীরচর্চা করলে ঘামও হয়। এতে ত্বকের লোমকূপের কার্যকারিতাও থাকে ঠিকঠাক।
ওজন ও শারীরিক গড়ন
শরীরচর্চার কমতি হলে শরীরের বিভিন্ন স্থানে মেদ জমতে থাকে, যা সৌন্দর্যের অন্তরায়। নিয়মিত শরীরচর্চায় নিয়ন্ত্রণে থাকে ওজন, ঝরে যায় শরীরের বাড়তি মেদ। বজায় থাকে স্বাভাবিক গড়ন। এ জন্য সৌন্দর্য থাকে অটুট।
জীবনধারার নিয়ম মেনে
ঠিকঠাক শরীরচর্চায় মানুষ উদ্যমী হয়ে ওঠে। ব্যায়ামের জন্য নিয়মিত যিনি আলাদা সময় বের করেন, স্বাভাবিকভাবেই তার জীবনধারা একটা ছন্দের মধ্যে থাকে। সময়ের কাজ সময়ে করতে সক্ষম হন এই মানুষেরা। খাওয়া-দাওয়াতেও নিয়ম মেনে চলা সম্ভব হয়। জীবনযাপনের এমন স্বাস্থ্যকর ধারা অনুসরণ করলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হুট করে হারিয়ে যায় না।
ভালো থাকে মন
শরীরচর্চায় মন প্রফুল্ল থাকে। শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। সৌন্দর্য তো কেবল গায়ের রং আর বাহারি অনুষঙ্গে নিজেকে সাজানো নয়, বরং সৌন্দর্য হলো আপন অন্তরের আভায় উদ্ভাসিত হওয়া। তাই নিজের যত্ন নিতে রুটিনে শরীরচর্চার জন্য কিছুটা সময় নির্দিষ্ট রাখতেই হবে।