শীতের সময় অনেকেই সকালের নাশতায় ছিটা রুটি বা চিতই পিঠার সঙ্গে গরম-গরম হাঁসের মাংস খেতে পছন্দ করেন, আবার বন্ধুদের সঙ্গে রাতের খাবার আয়োজনে খিচুড়ি আর হাঁসের মাংসভুনার চলও বেশ জনপ্রিয়। এই দুই দলের বাইরে কেউ কেউ শুধুই হাঁসের মাংস খেতে চলে যান রেস্তোরাঁয়। তবে এই পছন্দের খাবারে অনেকের অ্যাজমা বা অ্যালার্জি থাকে। কেউ কেউ জানতে চান, হাঁসের মাংস খেলে তা বাড়বে কি না।
হাঁসের মাংসে যাঁদের অ্যালার্জি থাকে, তাঁদের সাধারণত মুরগি, ডিম, গরুর মাংস, খাসির মাংস ইত্যাদিতেও অ্যালার্জি থাকে। এমনকি তাদের হাঁসের পালক ও বর্জ্যতেও অ্যালার্জি হয়। কীভাবে হয়?
হাঁসের পালক, বর্জ্য ও মাংসে যে প্রোটিন থাকে, তা আমাদের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধব্যবস্থার ইমিউনোগ্লোবিউলিন ই (IgE)-এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে হিস্টামিন ছড়ায়, ফলে অ্যালার্জির উপসর্গ দেখা দেয়।
উপসর্গ কী
অ্যালার্জির নানা রকম উপসর্গ হতে পারে। হাঁসের পালকের সংস্পর্শে এলে ফুসফুসের উপসর্গগুলো বেশি দেখা দেয় যেমন হাঁচি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, বুক চেপে আসা ইত্যাদি। অ্যালার্জির সাধারণ রোগীদের এসব উপসর্গ বেড়ে যায়। মাংস খাওয়ার পর বমি, পেটব্যথা, ডায়রিয়া হতে পারে এবং ঠোঁট ও জিহ্বা ফুলে যায়। ত্বকে লাল র্যাশ বা চাকা হয়ে ফুলে যায়, চুলকানি হয়। অ্যালার্জি সিভিয়ার বা মারাত্মক আকার ধারণ করলে অ্যানাফিল্যাক্সিস হয়, যা জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ, এ সময় সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে না নিলে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
কীভাবে বুঝব অ্যালার্জি আছে
সাধারণত উপসর্গ দেখেই বোঝা যায়। তবে ত্বকের অ্যালার্জি পরীক্ষা ও রক্তে ইমিউনোগ্লোবুলিন ই পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া যায়।
চিকিৎসা কী
প্রধান চিকিৎসা হলো, অ্যালার্জি থাকলে হাঁসের মাংস না খাওয়া, এমনকি হাঁসের পালক বা বর্জ্য থেকেও দূরে থাকা।
অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন কমানোর জন্য অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ খাওয়া।
কিছু ইমিউন থেরাপি নেওয়া যেতে পারে।
অ্যানাফিল্যাক্সিস হলে সঙ্গে সঙ্গে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া।
ডা. আফলাতুন আকতার জাহান, মেডিসিন স্পেশালিস্ট, ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগ, স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড, ঢাকা