একটি শিশু একটি পরিবারের জন্য শ্রেষ্ঠ উপহার। শিশুর আগমনী মুহূর্তে মা–বাবার সঙ্গে সঙ্গে আনন্দে মেতে ওঠে পুরো পরিবার। নবজাতকের সুস্থতার বিষয়টি মায়ের গর্ভ থেকেই শুরু হয়। প্রসবকালীন সময়ে নানা জটিলতা শিশুর সার্বিক সুস্থতায় ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
শিশু জন্ম নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রথম কান্নাটা খুব জরুরি। এই কান্নার মাধ্যমে নিশ্বাসে অক্সিজেন টেনে নেয় শিশু। এ সময়কে বলে সোনালি সময় বা গোল্ডেন মিনিট। কোনো কারণে নিশ্বাস নিতে না পারলে অক্সিজেন–সংকটে শিশুর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। হৃৎপিণ্ড, ব্রেইনে অক্সিজেন না পৌঁছানোর কারণে একসময় শ্বাস নিতে ব্যর্থ হয় শিশু। তার প্রতিটি অর্গান বা অঙ্গে মারাত্মক খারাপ প্রভাব ফেলে এই ঘটনা। এ সমস্যাকে বলে পেরিনাটাল অ্যাসফিক্সিয়া।
পেরিনাটাল অ্যাসফিক্সিয়ার লক্ষণ হলো শিশুর জন্মের পর না কাঁদা, শ্বাসকষ্টে শিশু কালো হয়ে যাওয়া, খিঁচুনি, শিশুর নড়াচড়া কমে যাওয়া, হৃৎপিণ্ডের গতি কমে যাওয়া। তাই জন্মের পর শিশু কেঁদে না ওঠলে দ্রুত তাকে হাসপাতাল বা নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে ভর্তি করাতে হবে। না হলে শিশুর জীবন বিপন্ন হতে পারে। দ্রুত চিকিৎসা না পেলে শিশুর পরে সেরিব্রাল পালসি, স্নায়ুজনিত সমস্যা, মৃগী রোগ, অন্ধত্ব, বধিরতা, কথা বলতে না পারা, বুদ্ধিমত্তা কমে যাওয়া অর্থাৎ শিশুর প্রতিবন্ধী হওয়ার শঙ্কা বেড়ে যায়।
তাই প্রসবকালীন সময় অনেক দীর্ঘ হলে অর্থাৎ সন্তান জন্ম দিতে যদি ১৮ ঘণ্টার বেশি সময় চেষ্টা করা লাগে, কোনোভাবে বাচ্চার মাথা আটকে যায়, বাচ্চার গলায় নাড়ি পেঁচিয়ে যায়, মায়ের যদি নানা ধরনের শারীরিক অসুস্থতা থাকে, সে ক্ষেত্রে চিকিৎসক প্রয়োজন মনে করলে শিশুর পেরিনাটাল অ্যাসফিক্সিয়ার ঝুঁকি কমানোর জন্য সিজার করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এতে করে শিশুর পেরিনাটাল অ্যাসফিক্সিয়ার ঝুঁকি কমানো সম্ভব।