আলু বেশির ভাগ মানুষের কাছে জনপ্রিয় সবজি। আলু বিভিন্ন ধরনের, যেমন রাসেট, ফিঙারলিং, লাল, সাদা, হলুদ, বেগুনি। এর মধ্যে লাল ও বেগুনি আলুতে সাদা আলুর চেয়ে তিন থেকে চার গুণ অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট থাকে। আলু গ্লুটেনমুক্ত, কোলেস্টেরল নেই, সোডিয়ামমুক্ত, ভিটামিন, খনিজ ফাইবার ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ। কিন্তু এতে শর্করা অনেক।
আলু নিয়ে কিছু তথ্য
আলুর ফাইবার হলো প্রতিরোধী স্টার্চ। এটি প্রিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। অদ্রবণীয় ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়। তবে আলুতে প্রতিরোধী স্টার্চের পরিমাণ অনেকটা প্রস্তুতির ওপর নির্ভর করে, যেমন রান্না করা আলুর স্টার্চে প্রায় ৭ শতাংশ প্রতিরোধী স্টার্চ থাকে, যা ঠান্ডা হওয়ার পর ১৩ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ে।
আলুতে ভাতের চেয়ে কার্বোহাইড্রেট বেশি। আবার আলুর চেয়ে ভাতে প্রোটিন বেশি।
খোসাসহ আলুর ফাইবার গোটা শস্যের রুটি, পাস্তা এবং সিরিয়ালের সমান।
একটি সেদ্ধ আলুতে চর্বি থাকে ০.২ গ্রাম। একটি বেকড করা আলুতে তা থাকে ০.৩ গ্রাম। একটি ভাজা আলুতে এটি থাকে ৫ গ্রাম। ওভেনে বেকড করা চিপসে থাকে ৬ গ্রাম আর ভাজা আলুর চিপসে ১০ থেকে ১৪ গ্রাম।
আলু খেলে সমস্যা কী
আলু উচ্চ তাপমাত্রায় রাঁধলে অ্যাক্রিলামাইড নামক বিষাক্ত রাসায়নিক উপাদান নির্গত করে। এ পদার্থের উচ্চ উপাদান মানুষের স্নায়ুতন্ত্র প্রভাবিত করে ও ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।
আলু ভাজলে যে তেল লাগে, তাতে ক্যালরি বাড়ে।
আলু প্রক্রিয়াজাত করার কারণে তা উচ্চ চর্বি, সোডিয়াম ও ক্যালরি ধারণ করে, যা স্বাস্থ্যের জন্য নেতিবাচক; বিশেষ করে ফেঞ্চ ফ্রাইস ও চিপসের মতো খাবারগুলো।
আলু মাখন, মার্জারিন বা অন্য চর্বিযুক্ত উপাদান দিয়ে রান্না করলে উচ্চ রক্তচাপ, টাইপ টু ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, ওজন বাড়াবে।
আলু খোসা ছাড়া সেদ্ধ করলে কিছু ভিটামিন ও খনিজের পুষ্টি হারাতে পারে। এ জন্য খোসাসহ রাঁধলে ভালো। এ ছাড়া আলুর ত্বকের ঠিক নিচে একটি পাতলা স্তরে সব পুষ্টি রয়েছে। এ জন্য সেদ্ধ আলুর সাবধানে খোসা ছাড়াতে হবে।
একটি সেদ্ধ আলুর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৭৮। তাই আলু খেলে সুগার বাড়তে পারে।
শুধু আলু না খেয়ে আলুর সঙ্গে সবজি যোগ করে খান। এতে রক্তে সুগারের মাত্রা স্থিতিশীল থাকবে।
আলুতে দুই ধরনের গ্লাইকোলকায়েড নামক প্রাকৃতিক টক্সিন, যেমন সোলাইন ও চকোনাইন থাকে। যদি আলুর কয়েক জায়গায় সবুজ চিহ্ন পাওয়া যায়, তাহলে না খাওয়াই ভালো। কারণ, এতে থাকা টক্সিন রান্না করলেও দূর হয় না।
লিনা আকতার, পুষ্টিবিদ, রাইয়ান হেলথ কেয়ার হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার, বিরামপুর, দিনাজপুর