স্ট্রেচ মার্ক কীভাবে দূর করা যায়

গর্ভকালীন অনেক নারীর ত্বকেই স্ট্রেচ মার্ক দেখা দেয়। একধরনের সাদাটে এই দাগ দেখতে খারাপ লাগা ছাড়া এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। তলপেটসহ পেট, ঊরু, বুক, লোয়ার ব্যাক অর্থাৎ শরীরের যেসব অংশে বেশি চর্বি জমে, সেখানেই স্ট্রেচ মার্ক দেখা দিতে পারে। পুরুষদেরও স্ট্রেচ মার্ক হতে পারে।

এই সমস্যা মূলত বাড়তি ওজনের কারণে হয়। শরীরের আয়তন বেড়ে গেলে ত্বক বাড়তি আয়তন ঢাকতে প্রসারিত হয়। ফলে এই দাগের সৃষ্টি হয়। ত্বকের মধ্যে যে একটা টান টান ভাব থাকে, তা কোলাজেন নামে একটি তন্তুর কল্যাণে। এই তন্তু ঠিকমতো তৈরি হতে না পারলে বা ভেঙে গেলে ওই দাগ দেখা যায়।

সে ক্ষেত্রে ত্বকের অন্তস্তর দুর্বল হয়ে যায় ও ফেটে ফেটে যায়। চামড়ায় অতিরিক্ত স্টেরয়েড ক্রিম লাগালে বা অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির গোলমালের কারণে বা অতিরিক্ত স্টেরয়েড খেলেও এই সমস্যা হয়।

নারীদের সাধারণত গর্ভধারণের ২০ সপ্তাহের মাথায় স্ট্রেচ মার্ক দেখা দেয়। এই সময় স্বাভাবিকভাবে একজন নারীর ওজন প্রায় ৯ থেকে ১২ কেজি পর্যন্ত বাড়তে পারে। এরপর প্রতি সপ্তাহে আধা কেজি করে ওজন বাড়ে। হঠাৎ এত ওজন বেড়ে যাওয়ায় স্ট্রেচ মার্ক দেখা দেয়। এটা সব অন্তঃসত্ত্বা নারীরই হতে পারে।

যা করতে হবে

স্ট্রেচ মার্ক এড়াতে এই সময় ত্বকের একটু আলাদা যত্ন নিতে হবে। চেষ্টা করতে হবে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখার। তাই পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে। মাছ, পালংশাক, বাদাম, কুমড়ার বিচি ইত্যাদি ভিটামিন ই-সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খাওয়া উচিত।

টমেটো খাবেন অবশ্যই। দিনে অন্তত দুবার নিয়ম করে ময়েশ্চারাইজার বা অলিভ অয়েল ব্যবহার করুন। নিয়মিত ব্যায়াম করুন।

তবে ব্যায়াম করবেন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী। এ ছাড়া স্ট্রেচ মার্ক এড়াতে ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শে ট্রেটিনয়েন জাতীয় ক্রিম মাখতে পারেন।

চিকিৎসা

ডার্মারোলার বা মাইক্রোনিডলিং নামক পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে প্রথমে লোকাল অ্যানেসথেটিক ক্রিম লাগিয়ে কিছুটা ত্বক অবশ করে রোলারটিকে চামড়ায় ঘষা হয়। এতে চার থেকে ছয় মাসের মধ্যে কিছু কোলাজেন নতুন করে তৈরি হয়। পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি ঘটে। সর্বাধুনিক ফ্র্যাকশনাল কার্বন ডাই-অক্সাইড লেজার পদ্ধতিতেও ভালো কাজ হয়। অনেক সময় স্ট্রেচ মার্ক দূর করতে সার্জারিও করা হয়।

  • ডা. জাহেদ পারভেজ, সহকারী অধ্যাপক, চর্ম, যৌন ও ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জারি বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল