কীভাবে কতখানি হাঁটলে পাবেন উপকার

এখনকার জীবনে শারীরিক পরিশ্রমের পরিসর অনেক কম। তাই মুটিয়ে যাওয়ার সমস্যায় এখন অনেকেই ভুগছেন। মুটিয়ে যাওয়া থেকে রেহাই পেতে অনেকেই হাঁটাহাঁটি করেন। কিন্তু তাতেও ফল পাচ্ছেন না অনেকেই। কারণ, তারা হাঁটছেন বটে, কিন্তু জানেন না কতখানি হাঁটতে হবে। কিংবা কীভাবে কত গতিতে হাঁটবেন। জেনে নেওয়া যাক হাঁটার এসব জরুরি দিক।

মুটিয়ে যাওয়ার সমস্যায় এখন অনেকেই ভুগছেন। কারণটাও সহজেই অনুমেয়। এখনকার জীবনে শারীরিক পরিশ্রমের পরিসর অনেক কম। তারই অনিবার্য ফল এটা। মুটিয়ে যাওয়া থেকে রেহাই পেতে অনেকেই হাঁটাহাঁটি করেন। কিন্তু তাতেও ফল পাচ্ছেন না অনেকেই। কারণ, তারা হাঁটছেন বটে, কিন্তু জানেন না কতখানি হাঁটতে হবে। কিংবা কীভাবে কত গতিতে হাঁটবেন। জেনে নেওয়া যাক হাঁটার এসব জরুরি দিক।

মুটিয়ে যাওয়ার জন্য কেবল বর্তমান জীবনপ্রণালিকেও দোষ দেওয়ার উপায় নেই

অবশ্য মুটিয়ে যাওয়ার জন্য কেবল বর্তমান জীবনপ্রণালিকেও দোষ দেওয়ার উপায় নেই। কারণ, বয়সের সঙ্গে মানুষ এমনিতেই মুটিয়ে যেতে থাকে। প্রতিবছর স্বাভাবিকভাবেই মানুষের ওজন বাড়ে আধা কেজি থেকে এক কেজি পর্যন্ত। উল্টো দিকে মধ্যবয়সে এলে এমনিতেই জীবন বদলে হাঁটাহাঁটির মতো স্বাভাবিক শারীরিক কসরত কমে যায়। তাই এ সময় থেকেই মনোযোগ দিতে হয় শরীরচর্চায়। সে জন্য সবচেয়ে সহজ ও কার্যকর উপায় হতে পারে হাঁটা।

ওজন কমাতে হাঁটা যে ভীষণ কার্যকর, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। সেই সঙ্গে এটা আপনাকে অনেক শারীরিক উপকারও দেবে। দূরে রাখবে জটিল সব রোগ ও সমস্যা। সে তালিকায় আছে ডায়াবেটিস, অনিদ্রা, উচ্চ রক্তচাপ, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার মতো সব ব্যাধি।

এখন প্রশ্ন হলো, দিনে কতখানি হাঁটবেন? সাধারণভাবে বলা হয়, যত বেশি হাঁটবেন, তত উপকার। তা ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সত্যি বটে। আপনি যদি দিনে ৪ মাইল হাঁটতে পারেন, মানে ৮ হাজার ২০০ পা হাঁটেন, নিশ্চিতভাবেই আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে। আবার যাঁরা আগেই মুটিয়ে গেছেন, এখন তা কমিয়ে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনতে চান, তাঁদের হাঁটতে হবে আরেকটু বেশি। সে জন্য সম্ভব হলে হাঁটার পরিমাণ বাড়িয়ে করে ফেলুন ১১ হাজার পা। অবশ্য এটা কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নয়। পুরোটাই নির্ভর করবে আপনার সক্ষমতা, সময় দিতে পারা ও প্রচেষ্টার ওপর। মোটাদাগে বলা হয়, প্রতিদিন ৬ হাজার থেকে ১১ হাজার পা হাঁটতে।

সাধারণভাবে বলা হয়, যত বেশি হাঁটবেন, তত উপকার। তা ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সত্যি বটে

এ তো গেল ওজন নিয়ন্ত্রণের হিসাব। কিন্তু রোগব্যাধি দূরে রাখতে গেলে হিসাব আবার খানিকটা ভিন্ন। এখানে আবার প্রচলিত ধারণা খাটে না। যত বেশি পা হাঁটবেন, তত বেশি উপকার এমনটা নয়। বরং অনেক ক্ষেত্রেই একটা পর্যায়ের পর আর আলাদা উপকার পাওয়া যায় না। যেমন ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হাঁটতে হবে ৮ থেকে ৯ হাজার পা। এর বেশি হাঁটলে অতিরিক্ত কোনো লাভ হয় না। তাই রোগবালাই দূরে রাখার জাদুকরি নম্বর বলা হয় ১০ হাজারকে। আপনি যদি প্রতিদিন এই পরিমাণ পা হাঁটেন, আপনার অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা কমে যাবে এক-তৃতীয়াংশ। এর চেয়ে বেশি হাঁটলেও তা–ই। তবে সেটা আপনাকে সাহায্য করবে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে।

তবে একবারে এত বেশি হাঁটা বেশ কষ্টকর। সেটাকে ভাগ করে দিনের বিভিন্ন সময়ে হাঁটতে পারেন। কাজের নানা পর্যায়ে যখন এদিক-ওদিক যাওয়া-আসা করা লাগে, সেখানেও জায়গা করে দিন হাঁটার। অনেকেই ভাবেন, সারা দিনের টুকটাক হাঁটা আসলে হিসাবের মধ্যে পড়ে না। সেটা ঠিক নয়। আপনি যখনই হাঁটবেন, সেটাই আপনার কাজে লাগবে। এমনকি হাঁটার গতির তারতম্যেও খুব বেশি যায়–আসে না। আপনার যেটুকু প্রয়োজন, সেটা হাঁটুন সারা দিনের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দরকার মিলিয়েই। কেবল চেষ্টা করবেন, অন্তত আধা ঘণ্টা দ্রুত হেঁটে শরীরকে হাঁপিয়ে তুলতে। তাহলেই পাবেন হাঁটার উপকারিতা।

তথ্যসূত্র: সিএনএন