কবি জীবনানন্দ দাশ লিখেছেন, ‘ঘাসের বুকের থেকে কবে আমি পেয়েছি যে আমার শরীর—সবুজ ঘাসের থেকে; তাই রোদ ভালো লাগে, তাই নীলাকাশ মৃদু ভিজে সকরুণ মনে হয়...’। সবুজ ঘাসের বুকে হাঁটার অনেক উপকারিতা। শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর এর প্রভাবের কথা জানুন—
১. সরাসরি মাটির স্পর্শ
ঘাসের ওপর খালি পায়ে হাঁটার সময় শরীর পৃথিবীপৃষ্ঠ মানে মাটি থেকে নেগেটিভ চার্জ বা ঋণাত্মক আয়ন শোষণ করতে পারে। যা মুঠোফোনের মতো বৈদ্যুতিক যন্ত্র থেকে জমে থাকা পজেটিভ চার্জ বা ধনাত্মক আয়ন নিষ্ক্রিয় করে দিতে পারে। এর ফলে শরীরের প্রদাহজনিত সমস্যা যেমন কমে, ঘুমের মান বাড়াতে পারে এবং সামগ্রিক সুস্থতা বাড়ায়। এটি শরীরের ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক (তড়িৎ চৌম্বকীয়) ভারসাম্য ঠিক রাখতেও যথেষ্ট ভূমিকা রাখে।
২. শারীরিক সচেতনতা বৃদ্ধি
আপনি যখন খালি পায়ে হাঁটেন, আপনার পায়ের পাতার স্নায়ুকোষ আপনার মস্তিষ্কে সংকেত পাঠায়। আপনার শরীরের গতিবিধির সামঞ্জস্য ও ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এই সংবেদনশীল স্নায়ু উদ্দীপনা মানসিক সুস্থতা এবং নিজের সম্পর্কে আরও ভালো বোধ তৈরি করতে ভূমিকা রাখে।
৩. হতাশা থেকে বাঁচুন
ঘাসের ওপর খালি পায়ে হাঁটার সময় যে প্রশান্তি আমরা পাই, তা মানসিক চাপ উপশমের প্রাকৃতিক দাওয়াই হিসেবে কাজ করে। পায়ের নিচের নরম, প্রাকৃতিক টেক্সচার প্রেশার পয়েন্টগুলোকে উদ্দীপিত করে, শিথিলতা এবং সুস্থতার বোধকেও চাঙা করে এই প্রক্রিয়া। কর্টিসল ও অ্যাড্রেনালিন হরমোনের মাত্রা কমিয়ে হতাশা, মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে।
৪. ব্যথা থেকে মুক্তি
ঘাসের ওপর খালি পায়ে হাঁটলে শরীরের ব্যথা কমায়। মাটির নেগেটিভ চার্জ শরীরের পজেটিভ চার্জ নিষ্ক্রিয় করতে সাহায্য করে। তাই প্রদাহ বা ব্যথাজনিত দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা সমাধানে রোজ সকালে খালি পায়ে সবুজ ঘাসের ওপর হাঁটুন।
৫. ভালো ঘুম হওয়া
নিয়মিতভাবে, বিশেষ করে সকালে ঘাসের ওপর খালি পায়ে হাঁটলে ঘুমের মান ভালো হয়। এতে মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমে। ফলে ঘুমের সমস্যা থাকলে ঘাসের বুকে নিয়মিত হাঁটার অভ্যাসটা গড়ে তুলতে পারেন।
৬. রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে
ঘাসের ওপর খালি পায়ে হাঁটা শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে বহুগুণে। এতে পায়ের স্নায়ুর উদ্দীপনা শরীরের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, যা শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। রক্তপ্রবাহের বৃদ্ধি মানে আরও বেশি অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবরাহ নিশ্চিত করে পুরো শরীরে।
৭. অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট টেনে নেওয়ার সুবিধা
পৃথিবীপৃষ্ঠ নেগেটিভ চার্জ ইলেকট্রনসমৃদ্ধ, যাকে প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্টও বলা হয়ে। ফলে খালি পায়ে ঘাসের ওপর বা মাটি স্পর্শ করে হাঁটলে শরীর মাটি থেকে সরাসরি নেগেটিভ ইলেকট্রন চার্জ শোষণ করতে পারে। এতে শরীরের হাইড্রোক্সিল চার্জের মতো ফ্রি রেডিক্যাল ধ্বংস হয় বলে এর কারণে ক্ষতির হাত থেকে বেঁচে যায় শরীরের প্রতিটি কোষ।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া