নানা শারীরিক সমস্যায় ওষুধ খেতে হয়। ইনজেকশন, ভ্যাকসিন, রক্ত বা স্যালাইন প্রয়োগ করতে হয়। তবে যেকোনো ওষুধে যে কারও শরীরে অনাকাঙ্ক্ষিত প্রতিক্রিয়া হতে পারে। একই ওষুধ একজনের জন্য নিরাপদ হলেও অন্য কারও জন্য বিপদের কারণ হতে পারে।
যেকোনো ওষুধ বা রাসায়নিকের সাধারণ প্রতিক্রিয়া হিসেবে বমি বমি ভাব বা বমি, দমবন্ধ লাগা, শরীর ফুলে যাওয়া, চুলকানি, র্যাশ ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। তবে সবচেয়ে পরিচিত উপসর্গ হলো জ্বর।
যে স্থানে ইনজেকশন বা ভ্যাকসিন দেওয়া হয়, সেখানে হালকা বা প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে। সারা শরীরেরও ব্যথা হতে পারে। অনেক সময় ইনজেকশন দেওয়ার স্থানে সঙ্গে সঙ্গে বা কিছুক্ষণ পরে ফোলা ভাব দেখা যায়। অনেক সময় ফুলে শক্ত হয়ে যায়, এমনকি সারা শরীরও ফুলে যেতে পারে।
অনেক সময় ইনজেকশন বা ভ্যাকসিন দেওয়ার স্থানে পুঁজ হয় এবং সেপসিস বা রক্তপ্রদাহে রূপান্তরিত হতে পারে।
কিছু ক্ষেত্রে রোগী অজ্ঞান হতে যেতে পারেন, এমনকি মৃত্যুও ঘটতে পারে।
প্রথমেই যে ওষুধ বা ইনজেকশনে আকস্মিক প্রতিক্রিয়া হলো, সেটির পরবর্তী প্রয়োগ বন্ধ করে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
ইনজেকশন বা ভ্যাকসিন-পরবর্তী ফোলা বা কঠিন হয়ে যাওয়া জায়গায় একটি কলম দিয়ে গোল চিহ্ন করে রাখুন। যদি কয়েক ঘণ্টা থেকে এক দিনের মধ্যে ত্বকের ফোলা ভাব বা শক্ত অবস্থার কোনো পরিবর্তন না ঘটে তবে চিকিৎসককে জানাতে হবে।
রোগী অজ্ঞান হয়ে গেলে, শ্বাসকষ্ট শুরু হলে বা ব্লাড প্রেশার বা পালস কম-বেশি হলে দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে।
একবার যে ওষুধ, ইনজেকশন, ভ্যাকসিন বা স্যালাইন প্রয়োগে আকস্মিক প্রতিক্রিয়া হয়েছে, সেটি সব সময় ব্যবস্থাপত্রে লিখে রাখতে হবে। বন্ধুবান্ধব ও স্বজনদের এই ওষুধের বিষয়ে জানতে হবে। পরে যেকোনো চিকিৎসা নিতে গেলে চিকিৎসককে তা জানাতে হবে।
অনিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালনে রক্তবাহিত রোগ যেমন হেপাটাইটিস বি, হেপাটাইটিস সি, এইডসসহ বিভিন্ন প্রাণঘাতী জীবাণু সহজেই রক্তের মাধ্যমে রক্তগ্রহীতার দেহে প্রবেশ করতে পারে। তাই পরিচিত ব্যক্তি ও নিবন্ধনকৃত ব্লাড ব্যাংক থেকে রক্ত নেওয়া ও দেওয়া উচিত।
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ, ইনজেকশন, রক্ত বা স্যালাইন নেওয়া যাবে না।
ডা. মধুরিমা সাহা, রেজিস্ট্রার, ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিন, বারডেম হাসপাতাল